ধর্ম

জুমাতুল বিদা কী ও কাকে বলে?

জুমাতুল বিদা— মূূূলত রমজান মাসের শেষ জুমাকে বলা হয়। দিনটি মুসলিম উম্মাহর কিছু মানুষের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বছরের শ্রেষ্ঠ মাস রমজানের শেষ জুমা হওয়ার কারণে এটি তাদের মতো অনেকের কাছে মর্যাদাশীল।
তবে জেনে রাখা উচিত, জুমাতুল বিদা নামে কোনো পরিভাষা শরিয়তে নেই। এটি পরবর্তী সময়ে আবিষ্কৃত একটি বিষয়। এছাড়াও এই দিনে কোনো নির্দিষ্ট নামাজ ও বিশেষ কোনো আয়োজন যদি কেউ করে থাকেন, সেটাও নব আবিষ্কৃত হিসেবে গণ্য হবে; শরিয়তে যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।
রমজান মাসের শেষ জুমায়া একটু স্পেশাল ভাইপ আনার জন্য এই নাম করন, তবে এই জুমায় স্পেশাল কোন আমল নেই। এটা সম্পুর্ন মানুষের তৈরী যদিও স্পেশাল কোন আমল নেই তবে রমজান মাসে যেহেতু ১ নেকি তে ৭০ নেকি সওয়াব পাওয়া যায় সেহেতু আপনি বেশি বেশি ইবাদত করতেই পারেন তবে বিদয়াত করা যাবে না খুব সাবধান।
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে জুমার দিনের মর্যাদা আরো বেড়ে যায়। রাসুল (সা.) জুমার দিন সম্পর্কে বলেছেন, তাতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোনো মুসলিম বান্দা মহান আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাইলে তিনি তা দেন। আর সেই মুহূর্ত খুবই কম সময়ের হয়ে থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের সব আমলের সওয়াব ১০ গুণ থেকে সাত শ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ বলেন, তবে রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব। সে কেবল আমার জন্য পানাহার ও প্রবৃত্তি পূরণ থেকে বিরত থেকেছে। ’

 রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, আগে আগে মসজিদে গমন করল, পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল, ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, কোনো কথা বলল না, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রতি কদমে এক বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। (মুসনাদে আহমাদ : ৫৮১)।

জুমার দিনে ছয়টি সুন্নাত:

জুমার দিনে ছয়টি সুন্নাতের কথা হাদিসে এসেছে। (১) ভালোভাবে গোসল করা। আমরা বাংলাদেশের অধিবাসীরা প্রতিদিন গোসল করে অভ্যস্ত। প্রতিদিনের গোসল আর জুমার দিনের গোসল এক নয়। জুমার দিন গোসল করার সময় সুন্নত পালনের নিয়ত করতে হবে এবং সওয়াবের আশা রাখতে হবে। হাদীসে ভালোভাবে গোসল করার কথা বলা হয়েছে। শরীর নাপাক হয়ে গেলে যেমনিভাবে খুব ভালোভাবে গোসল করা হয় যেন শরীরের প্রতিটি অংশে পানি পৌঁছে যায়, ঠিক তেমনিভাবে জুমার দিনও ভালোভাবে গোসল করে নেবে।

(২) আগে আগে সকাল সকাল মসজিদে গমন করা। জুমার দিন সাধারণত অফিস-আদালত, দোকান-পাট বন্ধ থাকে। মানুষ অবসরই থাকে। তাই আগে আগে মসজিদে চলে যাওয়া চাই। অপর এক হাদীসে জুমার দিন আগে আগে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি গোসল ফরজ হলে যেভাবে গোসল করে জুমার দিন ঠিক সেভাবে ভালো করে গোসল করে অতঃপর সর্বপ্রথম মসজিদে গমন করে, সে একটি উট সদকা করার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে।

এরপর দ্বিতীয়তে যে মসজিদে গমন করবে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় সদকা করার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। তৃতীয়তে যে গমন করবে সে একটি বকরি আল্লাহর রাস্তায় সদকা করার সওয়াব লাভ করবে। চতুর্থতে যে গমন করবে সে একটি মুরগি সদকা করার সওয়াব লাভ করবে। এরপর পঞ্চম নম্বরে যে প্রবেশ করবে সে একটি ডিম সদকা করার সওয়াব লাভ করবে। (সহীহ বুখারী : ৮৮১)।
(৩) হেঁটে মসজিদে যাবে, কোনো বাহনে আরোহণ করবে না। জুমার নামাজের জন্য কোনো বাহনে আরোহণ না করে হেঁটে হেঁটে মসজিদে যাওয়া সুন্নত। বিশেষ কোনো ওজর না থাকলে এ সুন্নত ত্যাগ করবে না। (৪) ইমামের কাছাকাছি বসবে। আগে আগে মসজিদে গেলে ইমামের কাছাকাছি বসার সুযোগ পাওয়া যায়। তো ইমামের কাছাকাছি বসাও সুন্নত।

(৫) মনোযোগসহ খুতবা শুনবে। মনে রাখতে হবে, জুমার খুতবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুক্রবারে জোহরের সময় জুমার নামাজ পড়ি। জোহর পড়ি চার রাকাত কিন্তু জুমা পড়ি দুই রাকাত। জুমার খুতবা দিতে হয় বলে দুই রাকাত নামাজ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তো জুমার খুতবা দুই রাকাত নামাজের মর্যাদা রাখে। তাই জুমার খুতবা প্রদান করাও ওয়াজিব, শ্রবণ করাও ওয়াজিব। আমরা জুমার খুতবা খুব মনোযোগসহ শ্রবণ করব।
(৬) অনর্থক কোনো কথাবার্তা বা কার্যকলাপে লিপ্ত হবে না। মসজিদে এসে নীরবে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকব। কোনো অনর্থক কথা বলব না। অনর্থক কোনো কাজও করব না। মসজিদে দীনি কথা বলা যাবে। কোরআন তেলাওয়াত করব। যিকির করব। অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা বলব না।

জুমার দিনের কিছু আমল:

  • (১) ভালো করে গোসল করতে হবে
  • (২) নতুন বা উত্তম জামা কাপড় পরতে হবে
  • (৩) আতর তথা সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে
  • (৪) হেঁটে মসজিদে যেতে হবে
  • (৫) আগে আগে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে
  • (৬) ইমামের কাছাকাছি জায়গায় বসতে হবে।
  • (৭) ইমামের খুতবা মনোযোগসহকারে শুনতে হবে
  • (৮) বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করতে হবে
  • (৯) কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, কোনো অনর্থক কাজ করা যাবে না।

Law Giant

A lawyer is a 'legal practitioner' who is an advocate, barrister, attorney, solicitor or legal adviser. Lawyers work primarily to solve the legal problems of individuals or organizations through the practical application of theoretical aspects of the law.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button