ওয়াকিটকি কি? ব্যবহারের নিয়ম, লাইসেন্স, আইন, দাম ইত্যাদি সর্ম্পকে জানুন
আমরা অনেক সময়ই আমাদের আশে পাশে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একটি ছোট কালো এন্যালগ মোবাইলের মত যন্ত্র দেখতে পাই। আমরা হয়ত অনেকেই জিনিসটির নাম জানি আবার অনেকে হয়ত এই ছোট কালো মেবাইলফোনের মত জিনিসটির নাম জানি না। এই জিনিসটির নাম হলো ওয়াকিটকি।
এক সময় ওয়াকিটকি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ কারী সৈন্যদের ব্যবহাররের জন্য দেওয়া হলেও বর্তমানে কিন্তু বেশ অনেক ধরনের কাজেই ওয়াকিটকি ব্যবহার করা হয়। ওয়াকিটকি করে তুলতে পারে আপনার কাজকে আরো বেশি সহজ। কিভাবে করবে সেটা নিয়ে পুরো আটির্কেল জুড়েই আলোচনা করা হবে। তো আজকের এই আটির্কেল থেকে আমরা ওয়াকিটকি সম্পর্কেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, এর ব্যবহার, এর দাম এবং এর প্রাপ্তিস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে জানবো।
সবার আগে আমরা জেনে নেই এই আটির্কেলটি পড়ে আমরা ঠিক কি কি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবো
- ওয়াকিটকি কি?
- ওয়াকিটকি কিভাবে কাজ করে
- ওয়াকিটকি ব্যবহারের নিয়ম
- ওয়াকিটকি আইন
- ওয়াকিটকি লাইসেন্স
- ওয়াকিটকি দাম কত
- ওয়াকিটকি কোথায় পাওয়া যায়
ওয়াকিটকি কি?(What is walkie talkie)
তারবিহীন ভাবে নির্দিষ্ট কিছু মানুষের সাথে যোগাযোগ করার একটি যন্ত্র বা মাধ্যমকেই ওয়াকিটকি বলে । যেটি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদানে সাহায্য করে । ওয়াকিটকির মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যাক্তিদের সাথে একই সময়ে যে কোন ধরনের বার্তা আদান প্রাদান করা যায় ও যে কোন ধরনের যোগাযোগ করা যায়। যোগাযোগের জন্য টেলিফোন কিংবা মোবাইল ফোনের মতো দেখতে এই যন্ত্রটির ব্যবহার আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত সহ খরচ কমাতে সহায়তা করবে এটাই ওয়াকিটকি নামে পরিচিত।
১৯৩৯ সালে Donald L.Hings, রেডিও ইঞ্জিনিয়ার Alfred J.Gross এবং Team of Motorola ওয়াকিটকি নামে এই যন্ত্র আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়।
ওয়াকিটকি কিভাবে কাজ করে
এটা সাধারনত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে কাজ করে থাকে । আপনি যদি এটার রেন্জ এর মাধ্যে অবস্থান করেন তাহলেই কেবল আপনি এটার মাধ্যমে বার্তা আদান প্রাদান করতে পারবেন আপনি যদি এটার রেন্জ এর বাহিরে চলে যান তাহলে আপনি আর ওয়াকিটকির মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন না।
ওয়াকিটকিতে সাধারণত ৫কিলোমিটারের মত রেন্জ থাকে।
ওয়াকিটকি ব্যবহারের নিয়ম ও ব্যবহার
ওয়াকিটকি একটি দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা। দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা মানে দুই পাশ থেকেই কথা বলতে পারবে এবং শুনতে পারবে।
তবে হ্যা এটা মোবাইল ফোনের মত দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা নয় । ওয়াকিটকিতে আপনি যখন কাউকে কোন বার্তা পাঠাবেন তখন আনাকে ওয়াকিটকিতে থাকা বাটনে চেপে কথা বলতে হবে তখন সেই নির্দিষ্ট ব্যাক্তিরা সেই বার্তাটি শুনতে পারবে।
এবং আপনি যখন কোন কিছু শুনতে চাইবেন তখন আপনাকে সেই বাটনটি ছেড়ে দিয়ে শুনতে হবে। ওয়াকিটকিতে মোবাইলফোনের মত একসাথে দুই জনের বলার সুযোগ নাই।
জননিরাপত্তার জন্য এর ব্যবহার বেশী করা হলেও বর্তমানে বিভিন্ন গার্মেন্টস, পাওয়ার স্টেশন, গোডাউন, ফ্যাক্টরি থেকে শুরু করে শপিং মল, ব্যাক্তিগত কাজেও ওয়াকিটকি ব্যাবহার করা হয়। তাছাড়া ইভেন্ট যেমন কনসার্ট, সম্মেলন, মিলাদ-মাহফিল, রাজনৈতিক সম্মেলন পরিচালনায় ওয়াকিটকি ব্যবহার করা হয়
তবে অবশ্যই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন থেকে নির্দিষ্ট একটি ফ্রিকোয়েন্সির লাইসেন্স নিয়ে ওয়াকিটকি ব্যবহার করতে হবে।
ওয়াকিটকি আইন
২০১৫ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের মাধ্যমে একটি নোটিশ প্রকাশের মাধ্যমে এই যন্ত্রের ক্রয় ও বিক্রির কিছু দিক নির্দেশনা সহ আইন অমান্যে ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা অথবা ১০ বছরের জেল কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রেখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
ওয়াকিটকি লাইসেন্স
ওয়াকিটকি ব্যবহার করার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। বিটিআরসি সাধারনত দুইধরনের লাইসেন্স ইস্যু করে থাকেঃ
- ১। Individual Frequency: লাইসেন্সে, যা সরকারী, আধা-সরকারি, এয়ারলাইন্স এর জন্য প্রযোজ্য। এটা একতা ফ্রিকোয়েন্সি একতা চ্যানেল এর জন্য। ব্যবহারকারি যেকোনো কোম্পানির ওয়াকিটকি ব্যবহার করতে পারবে। প্রতি ওয়াকিটকির জন্য প্রতি বছর ৪,৫০০ টাকা দিতে হবে।
- ২। Short Business Radio Frequency: এটি হচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য। এটার ফ্রিকোয়েন্সি ৮০ টা, ৮০ টা চ্যানেলের জন্য। বেবহারকারি যেকোনো চ্যানেল ব্যবহার করতে পারবে। তবে ব্যবহার কারি কালো রঙের ওয়াকিটকি ছাড়া অন্য যেকোনো রঙের ব্যবহার করতে পারবে।
ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য আপনাকে অবশ্যই বিটিআরসির লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে। লাইসেন্স ইস্যু করার অনেক সহজ, যা বিনা খরছে করা যায়।
ওয়াকিটকি দাম কত (walkie talkie Price in BD)
বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন দামে ওয়াকিটকি পাওয়া যায়। কারণ বিভিন্ন রকম ওয়াকিটটি বিভিন্ন দামে হয়ে থাকে। এর অবশ্য বেশ কিছু কারণ ও রয়েছে। প্রতিটি কম্পানির ওয়াকিটকি আলাদা আলাদা সুবিধা সম্মলিত হয়ে থাকে তাই কনফিগারেশন অনুযায়ী বিভিন্ন দামের হয়ে থাকে ঠিক যেমন মোবাইল ফোন বা আমরা যে আমাদের পছন্দের স্মার্টফোন কিনি সেই রকম।
তবে সাধারণত ২হাজার থেকে ২০হাজার টাকার মধ্যে ওয়াকিটকি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। ওয়াকিটকির দাম সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এই লিংক থেকে ঘুরে আসুন।
ওয়াকিটকি কোথায় পাওয়া যায়
বাংলাদেশে বিভিন্ন ই-কামর্স সাইটে ওয়াকিটকি বিক্রির জন্য দেখা যায়। তবে এটা অন্য সাধারণ জিনিসের মত কোন পণ্য বা শুধু একটি পোডার্ক্ট নয়। তাই আপনাকে অবশ্যই ওয়াকিটকি কিনতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
কারন ওয়াকিটকি ক্রয় ও বিক্রয়ের উপর কিন্তু বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশনের আইন রয়েছে তাই আপনি যদি ভুল কারো কাছ থেকে ওয়াকিটকি কিনার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে কিন্তু আইনি ব্যবস্থার মধ্যে পরার সম্ভবনা রয়েছে।
তাই ওয়াকিটকি কিনার প্রথমেই আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি যেখান থেকে ওয়াকিটকি কিনবেন তারা বিশ্বস্ত কিনা। আপনার কাছে যদি সেই রকম বিশ্বস্ত কোন সাইট বা দোকান থেকে থাকে তাহলে সেখান থেকে নিতে পারেন।
কারণ বিডিস্টলডটকম হলো আমার দেখা সবচেয়ে সেরা ই-কমার্স ওয়েবসাইট ওয়াকিটকি কিনার জন্য। আপনি চাইলে যে কোন ধরনের ওয়াকিটকি কিনে নিতে পারবেন। এবং আপনার পছন্দমত দামে বিভিন্ন কনফিগারেশনের ওয়াকিটকি কিনতে পারবেন।