মিথ্যা ধর্ষন মামলা থেকে বাচার উপায় || মিথ্যা মামলা, মিথ্যে অভিযোগ
মিথ্যা ধর্ষন মামলা থেকে বাচার উপায় || মিথ্যা মামলা, মিথ্যে অভিযোগ। নারী নির্যাতনের মামলায় নারীরা বিচার পাচ্ছেন না বলে প্রচুর অভিযোগ থাকলেও, কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন এ আইনের বলি না হয় সেদিকেই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।আমি জব লাইফে মিনিমাম ২০+ রেপ কেস তদন্ত করেছি! এর মধ্যে নিরেট সত্য কেস যেমন ছিল। প্রচুর মিথ্যা কেস ও পেয়েছি। ন্যায়-বিচারের অন্যতম শর্ত হলো, একজন নিরপরাধও যেন শাস্তি না পায়। নারী শিশু আইনের ১৭ ধারায় মিথ্যা মামলার সাজার বিষয়ে উল্লেখ আছে!
মিথ্যা ধর্ষন মামলা থেকে বাচার উপায়:
এখন প্রশ্ন হলোকীভাবে মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে রেহাই পাবেন? মানসিকভাবে যতটা সম্ভব শান্ত থাকুন। মনে রাখতে হবে, আইনের চোখে আপনার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি নিরপরাধ।
এজাহারের কপি
যদি আপনার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়, তাহলে এজাহারের কপিটি সংগ্রহের চেষ্টা করুন। আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করুন। নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটির সত্যতা না পেলে আপনাকে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন।
চার্জশিট বা অভিযোগপত্র
চার্জশিট বা অভিযোগপত্র হয়ে গেলে, নিম্ন আদালতে জামিন চাইতে হবে। জামিন না হলে পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে হবে। আপনি মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারেন। অব্যাহতির আবেদন নাকচ হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
জামিনের আবেদন
যদি এমন হয় যে, আপনি জানতে পারলেন না আর হঠাৎ পুলিশ এসে আপনাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেল, তাহলে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। তখন আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে হবে।
আত্মসমর্পণ
যদি থানায় মামলা না হয়ে আদালতে মামলা (সিআর মামলা) হয়, তাহলে আদালত সমন দিতে পারেন কিংবা গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষে হাইকোর্ট বিভাগে আগাম জামিন চাইতে পারেন।
পাল্টা মামলা দায়ের
দণ্ডবিধির ২১১ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলা করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আপনি নির্দোষ প্রমাণিত হলে মিথ্যা অভিযোগকারী বা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে আপনি পাল্টা মামলা দায়ের করতে পারেন। এছাড়া ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন। মিথ্যা নালিশ আনয়নকারী সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ করা যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ
কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আমলযোগ্য নয় এ রকম কোনো মামলায় মিথ্যা প্রতিবেদন দিলে তার বিরুদ্ধেও এ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করা যায়।
মিথ্যা ধর্ষন প্রচুর মামলা, মিথ্যে অভিযোগ
বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের প্রচুর মিথ্যা মামলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে পুলিশ বলছে নারী নির্যাতনের মামলার আশি শতাংশরই কোন প্রমাণ মেলেনা। পুলিশের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক সহেলী ফেরদৌস বলছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় জামিন পাওয়া সহজ নয় বলে অনেকে এর অপব্যবহার করছেন।
তিনি বলছেন, “যারা ফ্যব্রিকেটেড মামলা দেন তাদের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটা বড় সুবিধা হল যে এই আইনে জামিন পেতে বেগ পেতে হয়। আগে আইনটি জামিন অযোগ্য ছিল।এখন কিছু ক্ষেত্রে জামিন পাওয়া যায়। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রে আসামিকে জেলে থাকতে হয় না হয় অনেকে পালিয়ে থাকে। জামিন কঠিন হওয়ায় অনেকে এটি অপব্যবহার করেন। খুব দ্রুততম সময় এই মামলায় হয়রানি করার একটা সুযোগ রয়েছে।”
তিনি আরো বলছেন, “এর মামলা খুব দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করতে হয়। ৯০ দিনের মধ্যে। এ জন্য মামলার সংখ্যা বেড়ে যায়। মামলা করার পর প্রতিপক্ষ যে একটা চাপে থাকে, হেনস্তা হয় সে কারণে যাদের সাথে বিবাদ তারা হয়ত আপোষ করে ফেলে।”