পাসপোর্ট ও ভিসা
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে তার পুরো প্রক্রিয়া
পাসপোর্ট কিভাবে করতে হয় এবং কি কি লাগে?
১. পাসপোর্ট করতে হল প্রথম বয়স নির্ধারণ করা হয়, আপনার বয়স কত?
( বিশ(২০) বছরের নিচে হলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে করতে পারবেন, আর যদি বিশ(২০) বছরের উপরে হয়, এনআইডি কার্ড দিয়ে করতে হবে।
২. বর্তমানে সকল পাসপোর্ট ই- পাসপোর্ট হয়, এখন এম আর পি পাসপোর্ট হয় না বলেই চলে।
৩. প্রথমে অনলাইনে আবেদন করে, অনলাইন ফর্ম প্রিন্ট করে নিতে হবে।
আবেদন করতে যা লাগবে,
১। নিজের এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন
২। মা-বাবার এনআইডি কার্ড
৪. তার পর ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে। ব্যাংক ড্রাফটে এই ফি প্রযোজ্য –
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট ফি:
পাসপোর্ট ৪৮ পেইজ এবং ৫ বছর মেয়াদি
নরমাল ডেলিভারি ২১ দিনের মধ্যে : ৪,০২৫ টাকা
জুরুরি ডেলিভারি ১০ দিনের মধ্যে : ৬,৩২৫ টাকা
অতি জুরুরি ২ দিনের মধ্যে : ৪,৬২৫ টাকা
পাসপোর্ট ৪৮ পেইজ এবং ১০ বছর মেয়াদি
নরমাল ডেলিভারি ২১ দিনের মধ্যে : ৫,৭৫০ টাকা
জুরুরি ডেলিভারি ১০ দিনের মধ্যে : ৮,০৫০ টাকা
অতি জুরুরি ২ দিনের মধ্যে : ১০,৩৫০ টাকা
পাসপোর্ট ৬৪ পেইজ এবং ৫ বছর মেয়াদি
নরমাল ডেলিভারি ২১ দিনের মধ্যে :৬,৩২৫ টাকা
জুরুরি ডেলিভারি ১০ দিনের মধ্যে : ৪,৬২৫ টাকা
অতি জুরুরি ২ দিনের মধ্যে : ১২,০৭৫ টাকা
পাসপোর্ট ৬৪ পেইজ এবং ১০ বছর মেয়াদি
নরমাল ডেলিভারি ২১ দিনের মধ্যে : ৮,০৫০টাকা
জুরুরি ডেলিভারি ১০ দিনের মধ্যে : ১০,৩৫০ টাকা
অতি জুরুরি ২ দিনের মধ্যে : ১৩,৮০০টাকা
৫. ব্যাংক ড্রাফট হয়ে, ব্যাংক স্লিপটি অর্ধেক অংশ আবেদন ফর্মের দ্বিতীয় পেইজে আটা দিয়ে লাগিয়ে, পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে যাবেন।
দালান ছাড়া গেলে, আপনাকে হয়রানি করার জন্য, আপনার কাছে চাইতে পারে,
- আপনার ঘরের কারেন্ট বিলের কাগজ
- চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট বা নাগরিক সনদ
এগুলো পারলে সাথে করে নিয়ে যাবেন।
৬. তারপর পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের রেটিনা সংগ্রহ করার পর, আপনার একটা ডেলিভারি স্লিপ দিবে।
৭. ভালো করে দুই – তিন বার ডেলিভারি স্লিপটা দেখবেন কোনো ভুল আছে, ঠিকানা বা নিজের যাবতীয় তথ্য। যদি ভুল থাকে সাথে সাথে তাদের জানাবেন সংশোধন করে দিবে।
অনেক সময়, স্ট্রাফের লোক গুলো করে দিতে চাই না,
তখন পাসপোর্ট অফিসে এডি স্যার থাকেন, তার সাথে যোগাযোগ করবেন, পাঁচ মিনিটে হয়ে যাবে।
৮. যদি দালান দ্বারা করিয়ে থাকেন, তাহলে অরিজিনাল ডেলিভারি স্লিপটি কখনো তাদের হাতে দিবেন না, একটা কপি করে দিয়ে আসবেন।
৯. পাসপোর্ট তৈরি হয়ে অফিসে আসলে, মোবাইলে মেসেজ আসতে পারে বা আপনি অনলাইনে চেক দিয়ে দেখতে পারেন।
১০.নিজ দায়িত্বে অরিজিনাল ডেলিভারি স্লিপটা সাথে নিয়ে যাবেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে নিজের পাসপোর্ট সংগ্রহ করবেন।
সকালের পাসপোর্ট ঝামেলা বিহীন নিজের হাতে আসুক, সেই প্রত্যাশা রইলো।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে:
পাসপোর্ট ,দেশের বাইরে পৃথিবীর যেকোন দেশেই ভ্রমণ করতে আপনার অবশ্যই প্রয়োজনীয় একটি ডকুমেন্ট । পাসপোর্ট ছাড়া কেউই নিজ দেশের বাইরে ভ্রমণ বা কাজের জন্য যেতে পারেনা সেজন্য বিদেশ গমণে ইচ্ছুক প্রত্যেককে পাসপোর্ট করে নিতে হয়। দেশের প্রতিটি জেলা সদরেই রয়েছে পাসপোর্ট অফিস অথবা আপনি চাইলে ঢাকা থেকেও ঢাকাতে অস্হায়ী ঠিকানা দেখিয়ে করে নিতে পারবেন।
নতুন পাসপোর্ট আবেদন কারীদের জন্য যা যা লাগবে :-
১। জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্মসনদ এর সত্যায়িত দুই কপি ফটোকপি
২। সদ্যতোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি (সত্যায়িত করে নিতে হবে) তবে মনে রাখবেন ছবি ফর্মে লাগানোর পরে ছবির উপর দিয়ে সত্যায়িত করতে হবে । সিল অর্ধেক ফর্মে অর্ধেক ছবি তে এভাবে সত্যায়িত করতে হবে ।
৩। পাসপোর্টের পুরণ করা ফরম দুই কপি
৪। ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ
৫।নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট (এটা লাগতে পারে নাও লাগতে পারে সেজন্য জোগাড় করে সাথে নিয়ে যাওয়া ভালো লাগলে দিবেন না লাগলে দিবেন না )
এগুলোই হলো আপনার একটি পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট।
পাসপোর্ট করার বিস্তারিত প্রক্রিয়া:
সবগুলো কাগজপত্রতো সংগ্রহ করে নিলেন এবার আসুন আমরা প্রসেসিং এ যাই। প্রথমত আপনাকে ব্যাংকে পাসপোর্টের জন্য টাকা জমা দিতে হবে ,পাসপোর্ট সাধারণ ডেলিভারীর জন্য ৩৪৫০ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে এই ধরনের পাসপোর্ট ৩০ দিনের ভিতরে পাওয়া যায় আর জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য ৬৯০০ টাকা জমা দিতে হয় যা ১৫ দিনে ডেলিভারী দেওয়া হয় । জরুরী না হলে সাধারণ পাসপোর্ট করাই ভালো পাসপোর্টের জন্য টাকা জমা অনেক ব্যাংকেই নেয় যেমন সোনালী ব্যাংক ,ওয়ান ব্যাংক ,ট্রাস্ট ব্যাংক ,ব্যাংক এশিয়া ,ঢাকা ব্যাংক ইত্যাদি । যেকোন একটি ব্যাংকে গিয়ে বললেই হবে যে আপনি পাসপোর্টের জন্য টাকা জমা দিবেন। তারা কাউন্টার দেখিয়ে দিবে সেখানে রিসিটে লিখে জমা দিয়ে রিসিটটা নিয়ে চলে আসবেন। এই রিসিটটা কিন্তু যত্ন করে রাখবেন আপনি যে টাকা জমা দিয়েছেন এটাই এর প্রমাণ পাসপোর্টের জন্য। টাকা জমা দিলে এর মেয়াদ ৩ মাস পর্যন্ত থাকে মানে আপনি টাকা জমা দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে এই জমা দেওয়ার রিসিট দিয়ে পাসপোর্ট করে নিতে পারবেন।
পাসপোর্ট করতে অনলাইন ফরম পূরণ করার নিয়ম:
টাকাতো জমা দেওয়া হয়ে গেলো এবার অনলাইনে ফর্ম পুরণ করার পালা।
এই লিংকে চলে যান http://www.passport.gov.bd/
এখান থেকে সবদেখে শুনে সাবধানে পুরো ফর্মটা পূরণ করে প্রিন্ট করে নিন ,যদি কোন কারণে কোন কিছুতে ভুল করে থাকেন তাহলে সমস্যা নেই। আগেরটা বাদ দিয়ে আবার ফর্ম পুরণ করে নিন প্রিন্ট কিন্তু দুই কপি করবেন সাদাকালো বা রঙ্গিন কোন সমস্যা নেই। একটা হলেই হবে আর হ্যাঁ একটা পেইজের উভয় সাইডেই প্রিন্ট করবেন না হয় অনেক সময় জমা নিতে সমস্যা করে । প্রিন্ট করে আপনার পাসপোর্ট ছবি লাগিয়ে নিন গাম দিয়ে মনে রাখবেন ফর্মে ছবি লাগানোর পর ছবির উপর দিয়ে সত্যায়িত করবেন ছবি।
আর হ্যাঁ অনলাইনে একবার ফর্ম পূরণ করার পর ১৫দিন পর্যন্ত মেয়াদ থাকে জমা দেওয়ার ১৫দিনের মাঝে জমা না দিলে তা অনলাইন ডাটাবেজ থেকে মুছে যায়। আচ্ছাসেক্ষেত্রে আবারও ফর্ম পুরণ করে নিতে হবে। আপনার কাজ মোটামুটি শেষ এবার আপনার কাছের পাসপোর্ট অফিসে সবকিছু নিয়ে চলে যান ভিতরে প্রবেশ করে সিরিয়াল ধরে ছবি তুলে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে নিন ব্যাস কাজ শেষ।
এরপর কিছুদিন পরই আপনার ঠিকানা ভ্যারিফিকেশনের জন্য পুলিশ আপনাকে ফোন দিবে পুলিশ আপনার সাথে দেখা করবে বা আপনার বাসায় আসবে ঠিকানা যাচাই বাছাই করার জন্য । এক্ষেত্রে পুলিশ আপনার ব্যাপারে নিশ্চিত হবার জন্য এনআইডি/ জন্মসনদ/নাগরিক সনদ চাইতে পারে সবকিছু ঠিক থাকলে সাধারণত ৩০ দিনের মাঝেই আপনার পাসপোর্ট ডেলিভারী নেবার জন্য আপনাকে মোবাইলে মেসেজ দেওয়া হবে মেসেজ পেলে পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্টটি সংগ্রহ করে নিবেন ।
ব্যাস হয়ে গেলো সবকিছু বেরি সিম্পল তাইনা ?
পাসপোর্ট সংক্রান্ত আরও কিছু ছোট্র টিপস:-
পাসপোর্ট অফিসে আবেদন পত্র জমা সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত নেওয়া হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৫ বছরের কম) আবেদনকারীর ক্ষেত্রে আবেদনকারীর পিতা ও মাতার একটি করে রঙিন ছবি (৩০ x ২৫ মিঃমিঃ) আঠা দিয়ে লাগানোর পর সত্যায়ন করতে হবে। বিবাহিতদের ক্ষেত্রে ম্যারিজ সার্টিফিকেট চাইতে পারে। মৃত ব্যক্তিদের বেলায় Late /মরহুম /মৃত এসব লেখা যাবেনা।
লিখেছেন- কাবীর চৌধুরী