Travel

দার্জিলিং শহর ট্যুর প্লান গাইড- Darjeeling City Tour Plan Guide A to Z Information

দার্জিলিং শহর ট্যুর প্লান 🔥 দার্জিলিং যাকে কিনা বলা হয় ” Queen of the Himalayas ” কেনোই বা বলবে না হিমালয়ের কোলঘেসে গড়া ওঠা সুন্দর একটি শহর দার্জিলিং, যেখান থেকে আপনি সূর্যদয়ের সময়কার হিমালয় কে উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও রয়েছে সবুজে ভরা পাহাড় যার গায়ে চাদরের মতো জড়িয়ে আছে চা গাছ। এছাড়াও রয়েছে ইতিহাসের অনেক নিদর্শন। এজন্যই পূর্ব ভারতের অন্যতম সুন্দর হিল স্টেশন হলো দার্জিলিং।
দার্জিলিং নামের অর্থ কিন্তু বজ্রপাতের দেশ। দার্জিলিং নাম টি এসেছে তিব্বত শব্দ dorje যার অর্থ বজ্রপাত আর ling অর্থ দেশ। দার্জিলিং থেকে কিন্তু আপনি একসাথে হিমালয়ের ৫ টি সর্বোচ্চ চূড়ার ৪ টিকেই দেখতে পারবেন। দুইভাবে জলপাইগুড়ি বা দার্জিলিং যাওয়া সম্ভব। যদি আপনি দক্ষিণবঙ্গ তথা কুষ্টিয়া, খুলনা, যশোর এর আশেপাশে থাকেন তবে কলকাতা হয়ে জলপাইগুড়ি বাই ট্রেন যাওয়া বেটার। এতে করে দুইটা লাভ হবে।
এক আপনি ঝামেলা ছাড়াই সকালে জলপাইগুড়ি পৌছে দার্জিলিং চলে যেতে পারবেন। দুই কলকাতা সিটি টাও ঘুরে দেখতে পারবেন। আর ঢাকা বা আশেপাশের হলে গতানুগতিক রুট ঢাকা বাংলাবান্ধা হয়ে বাই রোডে জলপাইগুড়ি, এবং জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং।
০ দিনঃ ইমিগ্রেশন ক্রস করে একদম দার্জিলিং যেতে ২০০ রুপি খরচ পড়বে। ( আর বাংলাদেশ থেকে হিসাব করলে খরচ টা ৯০০ টাকা।)
আর আগের দিন কলকাতা হয়ে দার্জিলিং গেলে খরচ ইমিগ্রেশন থেকে কলকাতা কলকাতা যেতে খরচ পড়বে ২০০ রুপি। ট্রেন এ ভাড়া ৪০০ রুপি। এক ঘুমে সকালে জলপাইগুড়ি স্টেশন এ৷ এর পর ১৫০ রুপিতে দার্জিলিং৷ মোট খরচ ৭৫০ রুপির মতো আসে। এক্ষেত্রে কলকাতা হয়ে যাওয়া টাকে আমি বেশি প্রিফার করি। কারণঃ
১. ইমিগ্রেশন এ ঝামেলা নেই।
২. টাকা টু রুপির রেট ভালো পাওয়া যায়।
৩. সিম কেনা থেকে শুরু করে টুকটাক সিটি ট্যুর দিয়ে সন্ধার ট্রেনে চেপে সকাল নাগাদ শিলিগুড়ি পৌছে যাওয়া যায়। ( বাংলাবান্ধা হয়ে আসলে বর্ডার ক্রস করতে করতেই বেলা ১২টা বেজে যাবে। মানে শিলিগুড়ি আসতে ১ টা আর দার্জিলিং যেতে সন্ধ্যা! )
যাই হোক দার্জিলিং পৌছাতে বিকাল হবে। হোটেল বুকড করে রেস্ট নিয়ে ঘুরে দেখবেন দার্জিলিং শহর।
খরচঃ খাওয়ার জন্য ২৫০ রুপি + টুকটাক খরচ ১০০ + ভাড়া ২০০ রুপি জলপাইগুড়ি টু দার্জিলিং যেতে+ ২৫০ রুপি হোটেল ভাড়া = ৯০০ রুপি।
[ ২৫০*৪=১০০০ রুপি এক রুমের ভাড়া ধরা হয়েছে। এই দামে অবশ্যই খুজলে পেয়ে যাবেন। আর না পেলে হোস্টেল তো আছেই ]

দার্জিলিং এ মাস্ট ভিজিট প্লেস গুলোঃ

1. Darjeeling Himalayan Railway toy train : চাইলে জলপাইগুড়ি থেকে টয় ট্রেনে না এসে দার্জিলিং থেকে ৮০০ রুপি দিয়ে ঘুম পর্যন্ত রাইড ট্রিপ এ যাওয়া যায়। এই রুটেই পড়ে batasia loop এবং Darjeeling Himalayan Railway জাদুঘর। দুইটি ঘুরে দেখার জন্য অবশ্য বিরতি দেয়া হয়।
2.Tiger Hill : ১১ কিলো দূরে দার্জিলিং শহর থেকে। এটি মূলত ঘুম এরিয়াতে পড়েছে। ৮৪৮২ ফিট উঁচু এই পাহাড় টি কিন্তু দার্জিলিং এর সবচেয়ে উঁচু পাহাড়।
সূর্যাস্ত দেখতে হলে ভোর ৩.৩০ এর দিকে ট্যাক্সি ধরে রওনা দিতে হয়।
এন্ট্রি ফি পার পারসন ৫০ রুপি। রাউন্ড ট্রিপ এর ক্যাব ফেয়ার ১৪০০ রুপি৷
3. Batasia loop : টয় ট্রেনে ঘুম গেলেও এই জায়গা ঘুরে দেখা যায় কিংবা টাইগার হিলের সূর্যদয় দেখলেও ঘুরে দেখা যায়।
4.Darjeeling Ropeway: চক বাজার থেকে ৩ কিলো দূরে। রোপ ওয়ে তে ৫ কিলো জার্নির ফেয়ার ২০০ রুপি।
এর রুট হচ্ছে singamari থেকে singla bazar যার দূরত্ব ৮ কিলোমিটার।
5. The Rock Garden : ১০ কিলো দূরে দার্জিলিং শহর থেকে। ক্যাব বা ট্যাক্সি রিজার্ভ করে যেতে হয় কারণ পরে ফেরার জন্য গাড়ি পাওয়া যায় না।
6.Singalila National Park: ২৬ কিলো দূরে। ঘুম হয়ে যেতে হয়। মোটামুটি ২০০ রুপি শেয়ার ক্যাবে গেলে খরচ।ঢুকতে ১২০ রুপি আর রাত থাকলে ৫০০ রুপি।
7.Padmaja Naidu Zoo : ৩ কিলো দূরে দার্জিলিং চৌরাস্তা থেকে। ৩০ মিনিটের হাটা পথ। এন্ট্রি টিকেট ১০০ রুপি।
8. Happy Valley Tea Estate : দার্জিলিং চক বাজার থেকে ৩ কিলো দূরে। ওই ৩০-৩৫ মিনিট হাটার পথ।
9. Observatory hill : টয় ট্রেন স্টেশন থেকে ২ কিলো দূরে। হেটে যেতে হয়। mahakal mandir রয়েছে উপরে।
10. Peace Pagoda : ২ কিলো দূরে। হেটে ১৫-২০ মিনিটের পথ।
11.Ghum monestry : ghum এর কাছে এটি। ঘুম হয়েই যেতে হয় টাইগার হিল।

দার্জিলিং শহর ট্যুর খরচের হিসাব:

১ম দিনঃ আজকে দার্জিলিং সিটি ট্যুর। আশেপাশের সব পই পই করে হিসাব করে ঘুরে দেখবেন 🤣
রোপ ওয়ে, টি গার্ডেন, মন্দির, রক গার্ডেন এসব ঘুরে শেষ করবেন ৷ বিকালে দার্জিলিং এ শপিং করবেন।
খরচঃ খাওয়ার জন্য ২৫০ রুপি + টুকটাক খরচ ১০০ + ঘুরাঘুরি ও টিকেট ৪০০ রুপি + ২৫০ রুপি হোটেল ভাড়া+২০০ রুপি রোপ ওয়ে+৮০০ রুপি টয়ট্রেন = ২১০০ রুপি
২য় দিনঃ ৩ টার দিকে উঠে শেয়ার অটো বা রিজার্ভ ক্যাবে করে টাইগার হিল এ যাবেন। ঘুম থেকে রাস্তা আলাদা।
অটো রিজার্ভ নিলে ১৪০০ রুপি নিবে। এর পর আশেপাশে কিছু বাদ গেলে টুকটাক হেটে ঘুরে দেখা যাবে সব। রাত টা রেস্ট নিয়ে পরের দিন দেশের পথে।
খরচঃ খাওয়ার জন্য ৩০০ রুপি + টুকটাক খরচ ১০০ + ঘুরাঘুরি ২০০ রুপি + ২০০ রুপি টাইগার হিল যাওয়া আসা + ২৫০ রুপি হোটেল ভাড়া = ১০৫০ রুপি।
৩য় দিনঃ কিছু বাকি থাকলে ঘুরে আজ দেশের পথে।
খরচঃ খাওয়ার জন্য ৩০০ রুপি + টুকটাক খরচ ১০০ + ঘুরাঘুরি ২০০ রুপি + ২০০ রুপি বর্ডার পর্যন্ত আসা = ৮০০ রুপি।
টোটালঃ বর্ডার টু দার্জিলিং টু বর্ডার খরচ হলো ৩৯৫০ রুপি বা ৪৫০০ টাকা ।সেই সাথে দেশের আপ ডাউন ভাড়া ১২০০ এড করলে ৪৫০০+১২০০ = ৫৭০০ বা ৬০০০ টাকা আসে।
এটা একদম সুন্দর করে দার্জিলিং শহর ঘুরে আসার প্লান। এই ট্যুর প্লান এ সবকিছুই বাজেট হিসাবে করা, লোকাল ট্রান্সপোর্ট কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
লিখেছেন: Nafis Anaam Sourav

দার্জিলিং শহর ট্যুর পাবলিক রিভিউ:

কিছুটা দ্বিমত আছে এখানে। বাংলাবান্ধার বাস আপনি রাত ৮-৯ টার পরে কোনটা পাবেন কিনা ঢাকা থেকে তাতে সন্দেহ আছে। সে মোতাবেক ১২ ঘণ্টা ম্যাক্সিমাম জার্নি করলেই বাংলাবান্ধা পৌঁছে যাওয়া যায়। ওই ইমিগ্রেশনে তেমন একটা ভিড় থাকে না নর্মালি। আর ওখান থেকে ২০ মিনিটে শিলিগুড়ি, তারপর দার্জিলিংয়ের জিপ নিয়ে ডেস্টিনেশনে। সন্ধ্যা হওয়ার চান্স নেই এদিক দিয়ে গেলে। বরং বুড়িমারী বর্ডার দিয়ে গেলে অকেশনাল টাইমে ধরা খাওয়ার যথেষ্ট চান্স আছে।
আমরা নিজেরাও ধরা খেয়েছিলাম। কারন প্রচন্ড ভিড়। তবে বুড়িমারী বর্ডারে রুপি কনভার্শন ক্ষেত্রবিশেষে বেনাপোলেও পাবেন না, একথা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। কলকাতা ঘুরে দার্জিলিং বেশ ভালো রকম হ্যাসেল। তবে যদি এনাফ টাইম থাকে আর এই ঘুরান্টি জার্নির হ্যাসেল যদি নেয়ার মত এবিলিটি থাকে তাইলে ওইভাবে যাওয়া যায়। তবে ওইদিকে গেলে দার্জিলিং মেলটা একটা এট্রাকশন। – Md. Zanif Zafar Rajvi

সমস্যা হচ্ছে… কলকাতা থেকে দার্জিলিং যাওয়ার ট্রেনের টিকিটই তো পাওয়া যায়না,কম করে হলেও অন্তত ২/৩ দিন আগে থেকেই বুকিং দিলে পাওয়া যেতে পারে… যেদিন কলকাতা পৌঁছেছি, সেদিন দার্জিলিং ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয়না। আমি তো পাইনি,পরে বাসে গিয়েছিলাম, সেটাও অবশ্য মজার ছিলো- Sume Islam

Law Giant

A lawyer is a 'legal practitioner' who is an advocate, barrister, attorney, solicitor or legal adviser. Lawyers work primarily to solve the legal problems of individuals or organizations through the practical application of theoretical aspects of the law.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button