আল্লাহর ৯৯টি নাম, অর্থ, বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত- Allah 99 Names
“আল্লাহ ” নামটি উচ্চারণ করলে যেন মনে একটা প্রশান্তি অনুভব হয়। পবিত্র কুরআন ও হাদিস মতে মহান আল্লাহর অনেকগুলো গুনবাচক নাম রয়েছে। আর এর সংখ্যা হল ৯৯ টি। কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন এর সংখ্যা ৯৯ এর অধিক প্রায় ৪০০০।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলার নিরানব্বই নাম আছে, এক কম একশত নাম। যে ব্যক্তি এ (নাম) গুলোর হিফাযাত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ্ বিজোড়। তিনি বিজোড় পছন্দ করেন।
সহীহ বুখারী (হাদিসঃ ৬৪১০)
আল্লাহর ৯৯টি নাম, অর্থ, বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত
১ আল্লাহالله
অর্থঃ আল্লাহ
✸ Allah
২ আর রাহমানالرحمن
অর্থঃ পরম দয়ালু, পরম করুণাময়, সবচেয়ে দয়ালু, কল্যাণময়
✸ Ar-Rahman
– The One who has plenty of mercy for the believers and the blasphemers in this world and especially for the believers in the hereafter.
– The Most Merciful
৩ আর-রাহীমالرحيم
অর্থঃ অতিশয়-মেহেরবান, অতি দয়ালু
✸ Ar-Rahim
– The One who has plenty of mercy for the believers.
– The most Compassionate
৪ আল-মালিকالملك
অর্থঃ সর্বকর্তৃত্বময়, অধিপতি, মালিক
✸ Al-Malik
– The One with the complete Dominion, the One Whose Dominion is clear from imperfection.
– The King, the Monarch
৫ আল-কুদ্দুসالقدوس
অর্থঃ নিষ্কলুষ, অতি পবিত্র
✸ Al-Quddus
– The One who is pure from any imperfection and clear from children and adversaries.
– The Holy one
৬ আস-সালামالسلام
অর্থঃ নিরাপত্তা-দানকারী, শান্তি-দানকারী, ত্রাণকর্তা, দোষমুক্ত
✸ As-Salam
– The One who is free from every imperfection.
– The Peace, The Tranquility
৭ আল-মু’মিনالمؤمن
অর্থঃ নিরাপত্তা ও ঈমান দানকারী, জামিনদার, সত্য ঘোষণাকারী
✸ Al-Mu’min
– The One who witnessed for Himself that no one is God but Him. And He witnessed for His believers that they are truthful in their belief that no one is God but Him.
– The One with Faith
– The Faithful, The Trusted
৮ আল-মুহাইমিনالمهيمن
অর্থঃ পরিপূর্ন রক্ষণাবেক্ষণকারী, রক্ষক, অভিভাবক, প্রতিপালনকারী
✸ Al-Muhaymin
– The One who witnesses the saying and deeds of His creatures.
– The Protector
– The vigilant, the controller
৯ আল-আ’জীজالعزيز
অর্থঃ পরাক্রমশালী, অপরাজেয়, সর্বাধিক সম্মানিত, মহাসম্মানিত
✸ Al-‘Aziz
– The Defeater who is not defeated.
– The Mighty
– The Almighty, the powerful
১০ আল-জাব্বারالجبار
অর্থঃ দুর্নিবার, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত
✸ Al-Jabbar
– The One that nothing happens in His Dominion except that which He willed.
– The all Compelling
১১ আল-মুতাকাব্বিইরالمتكبر
অর্থঃ নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ, গৌরবান্বিত, অহংকারী
✸ Al-Mutakabbir
– The One who is clear from the attributes of the creatures and from resembling them.
– The Haughty, the Majestic
– The Imperious
১২ আল-খালিক্বالخالق
অর্থঃ সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টিকারী
✸ Al-Khaliq
– The One who brings everything from non-existence to existence.
– The Creator, the Maker
১৩ আল-বারীالبارئ
অর্থঃ সঠিকভাবে সৃষ্টিকারী
✸ Al-Bari’
– The Creator who has the Power to turn the entities.
– The Artificer, the Creator
১৪ আল-মুছউইরالمصور
অর্থঃ আকৃতি-দানকারী
✸ Al-Musawwir
– The One who forms His creatures in different pictures.
– The Fashioner
– The Organizer, the Designer
১৫ আল-গফ্ফারالغفار
অর্থঃ পরম ক্ষমাশীল, অতি ক্ষমাশীল
✸ Al-Ghaffar
– The One who forgives the sins of His slaves time and time again.
– The Forgiving, the Forgiver
১৬ আল-ক্বাহারالقهار
অর্থঃ কঠোর, মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী
✸ Al-Qahhar
– The Subduer who has the perfect Power and is not unable over anything.
– The Almighty, the Dominant
১৭ আল-ওয়াহ্হাবالوهاب
অর্থঃ সবকিছু দানকারী, দানশীল, স্থাপনাকারী
✸ Al-Wahhab
– The One who is Generous in giving plenty without any return.
– The Donor, the Bestower
১৮ আর-রজ্জাক্বالرزاق
অর্থঃ রিযিকদাতা
✸ Ar-Razzaq
– The Provider, the Sustainer
১৯ আল ফাত্তাহالفتاح
অর্থঃ বিজয়দানকারী, শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী, প্রারম্ভকারী
✸ Al-Fattah
– The One who opens for His slaves the closed worldly and religious matters.
– The Opener, the Reveler
২০ আল-আ’লীমالعليم
অর্থঃ সর্বজ্ঞ, মহাজ্ঞানী
✸ Al-‘Alim
– The Knowledgeable; The One nothing is absent from His knowledge.
– The all Knowing, the Omniscient
২১ আল-ক্ববিদ্ব’القابض
অর্থঃ নিয়ন্ত্রণকারী, সরল পথ প্রদর্শনকারী
✸ Al-Qabid
– The One who constricts the sustenance.
– The Contractor, The Restrainer, the Recipient.
২২ আল-বাসিতالباسط
অর্থঃ প্রশস্তকারী
✸ Al-Basit
– The One who expands and widens.
– The Expander, He who expands
২৩ আল-খফিদ্বুالخافض
অর্থঃ অবনতকারী (কাফির ও মুশরিকদের, অবিশ্বাসীদের অপমানকারী)
✸ Al-Khafid
– The One who lowers whoever He willed by His Destruction.
– The Abaser, the Humbler
২৪ আর-রফীই’الرافع
অর্থঃ উন্নতকারী, উঁচুকারী
✸ Ar-Rafi’
– The One who raises whoever He willed by His Endowment.
– The Raiser, the Exalter
২৫ আল-মুই’জ্বالمعز
অর্থঃ সম্মান-দানকারী
✸ Al-Mu’iz
– He gives esteem to whoever He willed, hence there is no one to degrade Him;
– The Honorer, the Exalter
২৬ আল-মুদ্বি’ল্লু (আল-মুযিল্ল)المذل
অর্থঃ (অবিশ্বাসীদের) বেইজ্জতকারী, সম্মান হরণকারী
✸ Al-Muzil
– Degrades whoever he willed, hence there is no one to give him esteem.
– The Abaser, the Degrader, the Subduer
২৭ আস্-সামিই’السميع
অর্থঃ সর্বশ্রোতা
✸ As-Sami’
– The One who Hears all things that are heard by His Eternal Hearing without an ear, instrument or organ.
– The Hearer, The All hearing, all knowing.
২৮ আল-বাছীরالبصير
অর্থঃ সর্ববিষয়-দর্শনকারী, সর্বদ্রষ্টা
✸ Al-Basir
– The One who Sees all things that are seen by His Eternal Seeing without a pupil or any other instrument.
– The Seer, The discerning, the All seeing.
২৯ আল-হা’কামالحكم
অর্থঃ অটল বিচারক, মহা বিচারপতি, হুকুমদাতা
✸ Al-Hakam
– He is the Ruler and His judgment is His Word.
– The arbitrator, the Judge
৩০ আল-আ’দলالعدل
অর্থঃ পরিপূর্ণ-ন্যায়বিচারক, নিখুঁত, ন্যায় বিচারক
✸ Al-‘Adl
– The One who is entitled to do what He does.
– The justice, the equitable.
– The Just.
৩১ আল-লাতীফاللطيف
অর্থঃ সকল-গোপন-বিষয়ে-অবগত, সূক্ষ্মদর্শী, অমায়িক
✸ Al-Latif
– The Most Gentle, the Gracious.
– The One who is kind
৩২ আল-খ’বীরالخبير
অর্থঃ সকল ব্যাপারে জ্ঞাত, সর্বজ্ঞ
✸ Al-Khabir
– The One who knows the truth of things.
– The Aware.
– The Sagacious, one is who is aware.
৩৩ আল-হা’লীমالحليم
অর্থঃ অত্যন্ত ধৈর্যশীল, মহা সহনশীল, প্রশ্রয়দাতা
✸ Al-Halim
– The One who delays the punishment for those who deserve it and then He might forgive them.
– The Gentle. The most patient, the Clement.
৩৪ আল-আ’জীমالعظيم
অর্থঃ সর্বোচ্চ-মর্যাদাশীল, মহা মর্যাদাপূর্ণ, অতি বিরাট
✸ Al-‘Azim
– The One deserving the attributes of Exaltment, Glory, Extolment, and Purity from all imperfection.
– The Great, Mighty
৩৫ আল-গফুরالغفور
অর্থঃ পরম ক্ষমাশীল, মার্জনাকারী, অতীব ক্ষমাশীল
✸ Al-Ghafoor
– The One who forgives a lot.
– The Forgiving, the Pardoner.
৩৬ আশ্-শাকুরالشكور
অর্থঃ গুনগ্রাহী, সুবিবেচক
✸ Ash-Shakur
– The One who gives a lot of reward for a little obedience.
– The Grateful, the Thankful
৩৭ আল-আ’লিইউالعلي
অর্থঃ উচ্চ-মর্যাদাশীল
✸ Al-‘Ali
– The One who is clear from the attributes of the creatures.
– The most high, the exalted.
৩৮ আল-কাবিইরالكبير
অর্থঃ সুমহান, অতি বিরাট
✸ Al-Kabir
– The One who is greater than everything in status.
– The great, the big.
৩৯ আল-হা’ফীজالحفيظ
অর্থঃ সংরক্ষণকারী
✸ Al-Hafiz
– The One who protects whatever and whoever He willed to protect.
– The Guardian, the preserver.
৪০ আল-মুক্বীতالمقيت
অর্থঃ সকলের জীবনোপকরণ-দানকারী, সংরক্ষণকারী, লালনপালনকারী
✸ Al-Muqit
– The One who has the Power.
– The maintainer, The Nourisher
৪১ আল-হাসীবالحسيب
অর্থঃ হিসাব-গ্রহণকারী, মহা মীমাংসাকারী
✸ Al-Hasib
– The One who gives the satisfaction.
– The noble, The Reckoner
৪২ আল-জালীলالجليل
অর্থঃ পরম মর্যাদার অধিকারী, গৌরবান্বিত
✸ Aj-Jalil
– The One who is attributed with greatness of Power and Glory of status.
– The Majestic. The honorable, the exalted.
৪৩ আল-কারীমالكريم
অর্থঃ সুমহান দাতা, মহা সম্মানিত, মহা দয়ালু
✸ Al-Karim
– The One who is clear from abjectness.
– The most generous, the Bountiful.
৪৪ আর-রক্বীবالرقيب
অর্থঃ তত্ত্বাবধায়ক
✸ Ar-Raqib
– The One that nothing is absent from Him. Hence it’s meaning is related to the attribute of Knowledge.
– The Guardian, the watchful.
– Watcher.
৪৫ আল-মুজীবالمجيب
অর্থঃ জবাব-দানকারী, সাড়া দানকারী, উত্তরদাতা, দো‘আ কবুলকারী
✸ Al-Mujib
– The One who answers the one in need if he asks Him and rescues the yearner if he calls upon Him.
– The Responder.
– The respondent, one who answers.
৪৬ আল-ওয়াসি’الواسع
অর্থঃ সর্ব-ব্যাপী, অসীম, ব্যাপক
✸ Al-Wasi’
– The Englober. The enricher, the Omnipresent, the Knowledgeable.
৪৭ আল-হাকীমالحكيم
অর্থঃ পরম-প্রজ্ঞাময়, সুবিজ্ঞ, সুদক্ষ
✸ Al-Hakim
– The One who is correct in His doings.
– The most Wise, the Judicious.
৪৮ আল-ওয়াদুদالودود
অর্থঃ (বান্দাদের প্রতি) সদয়, প্রেমময়, পরম স্নেহশীল
✸ Al-Wadud
– The Affectionate, the Loving.
৪৯ আল-মাজীদالمجيد
অর্থঃ সকল-মর্যাদার-অধিকারী, মহিমান্বিত, সম্মানিত
✸ Al-Majid
– The One who is with perfect Power, High Status, Compassion, Generosity and Kindness.
– The Glorious, the exalted.
৫০ আল-বাই’ছ’الباعث
অর্থঃ পুনুরুজ্জীবিতকারী
✸ Al-Ba’ith
– The One who resurrects for reward and/or punishment.
– The Resurrector, the Raiser from death.
৫১ আশ্-শাহীদالشهيد
অর্থঃ সর্বজ্ঞ-স্বাক্ষী, প্রত্যক্ষদর্শী
✸ Ash-Shahid
– The One who nothing is absent from Him.
– The Witness
৫২ আল-হা’ক্বالحق
অর্থঃ পরম সত্য
✸ Al-Haqq
– The One who truly exists.
– The Truth, the Just.
৫৩ আল-ওয়াকিলالوكيل
অর্থঃ পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী, তত্ত্বাবধায়ক, সহায় প্রদানকারী, আস্থাভাজন উকিল
✸ Al-Wakil
– The One who gives the satisfaction and is relied upon.
– The Guardian, the Trustee
৫৪ আল-ক্বউইউالقوي
অর্থঃ পরম-শক্তির-অধিকারী
✸ Al-Qawee
– The One with the complete Power.
– The powerful, the Almighty, The Strong
৫৫ আল-মাতীনالمتين
অর্থঃ সুদৃঢ়, সুস্থির
✸ Al-Matin
– The One with extreme Power which is un-interrupted and He does not get tired.
– The Strong, the Firm
৫৬ আল-ওয়ালিইউالولي
অর্থঃ অভিভাবক ও সাহায্যকারী
✸ Al-Walee
– The Supporter, the Friend, the Defender the master.
৫৭ আল-হা’মীদالحميد
অর্থঃ সকল প্রশংসার অধিকারী, সকল প্রশংসার দাবীদার, মহা প্রশংসনীয়
✸ Al-Hamid
– The praised One who deserves to be praised.
– The Praiseworthy , the Commendable
৫৮ আল-মুহছীالمحصي
অর্থঃ সকল সৃষ্টির ব্যপারে অবগত
✸ Al-Muhsi
– The One who the count of things are known to him.
– The Counter
৫৯ আল-মুব্দি’المبدئ
অর্থঃ প্রথমবার-সৃষ্টিকর্তা, অগ্রণী, প্রথম প্রবর্তক
✸ Al-Mubdi’
– The One who started the human being. That is, He created him.
– The Beginner, the Creator, The Originator
৬০ আল-মুঈ’দالمعيد
অর্থঃ পুনরায়-সৃষ্টিকর্তা
✸ Al-Mu’eed
– The One who brings back the creatures after death.
– The Restorer, the Resurrector.
৬১ আল-মুহ’য়ীالمحيي
অর্থঃ জীবন-দানকারী
✸ Al-Muhyee
– The One who took out a living human from semen that does not have a soul. He gives life by giving the souls back to the worn out bodies on the resurrection day and He makes the hearts alive by the light of knowledge.
– The Bestower, the Life Giver.
৬২ আল-মুমীতالمميت
অর্থঃ মৃত্যু-দানকারী
✸ Al-Mumeet
– The One who renders the living dead.
– The Bringer of Death.
– The Death Giver.
৬৩ আল-হাইয়্যুالحي
অর্থঃ চিরঞ্জীব, যার কোন শেষ নেই
✸ Al-Hayy
– The One attributed with a life that is unlike our life and is not that of a combination of soul, flesh or blood.
– The Living. The Alive, the ever living.
৬৪ আল-ক্বাইয়্যুমالقيوم
অর্থঃ সমস্তকিছুর ধারক ও সংরক্ষণকারী
✸ Al-Qayyum
– The One who remains and does not end.
– The Self-Subsistent, The Eternal, the Self Sustaining.
৬৫ আল-ওয়াজিদالواجد
অর্থঃ অফুরন্ত ভান্ডারের অধিকারী
✸ Al-Wajid
– The Rich who is never poor. Al-Wajd is Richness.
– The all perceiving, the Opulent, the Finder.
৬৬ আল-মুহীতالمحيط
অর্থঃ পরিবেষ্টনকারী, সর্ব বেষ্টনকারী
✸ Al-Muhit
– The Encompassing
– Ocean
৬৭ আল-ওয়াহি’দالواحد
অর্থঃ এক ও অদ্বিতীয়
✸ Al-Wahid
– The One without a partner.
– The One, the Unique.
৬৮ আছ্-ছমাদالصمد
অর্থঃ অমুখাপেক্ষী,অবিনশ্বর, চিরন্তন, স্বয়ং সম্পূর্ণ
✸ As-Samad
– The Master who is relied upon in matters and reverted to in ones needs.
– The Perfect, the Eternal.
৬৯ আল-ক্বদিরالقادر
অর্থঃ সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমতাধর
✸ Al-Qadir
– The One attributed with Power.
– The Able, the Capable, the Omnipotent.
৭০ আল-মুক্ব্তাদিরالمقتدر
অর্থঃ নিরঙ্কুশ-সিদ্বান্তের-অধিকারী
✸ Al-Muqtadir
– The One with the perfect Power that nothing is withheld from Him.
– The Capable, The all Powerful
৭১ আল-মুক্বদ্দিমالمقدم
অর্থঃ অগ্রসারক, সর্বাগ্রে সহায়তা প্রদানকারী
✸ Al-Muqaddim
– He makes ahead what He wills.
– The Presenter, The Advancer, The Expediter
৭২ আল-মুয়াক্খিরالمؤخر
অর্থঃ অবকাশ দানকারী, বিলম্বকারী
✸ Al-Mu’akhkhir
– The One who delays what He wills.
– The Fulfiller, the keeper behind, The Deferrer
৭৩ আল-আউয়ালالأول
অর্থঃ অনাদি, প্রথম
✸ Al-‘Awwal
– The One whose Existence is without a beginning.
– The First
৭৪ আল-আখিরالأخر
অর্থঃ অনন্ত, সর্বশেষ
✸ Al-‘Akhir
– The One whose Existence is without an end.
– The Last
৭৫ আজ-জ’হিরالظاهر
অর্থঃ সম্পূর্নরূপে-প্রকাশিত, প্রকাশ্য
✸ Az-Zahir
– The Apparent, the Exterior, The Manifest
– The One that nothing is above Him and nothing is underneath Him, hence He exists without a place.
৭৬ আল-বাত্বিনالباطن
অর্থঃ দৃষ্টি হতে অদৃশ্য, গোপন
✸ Al-Batin
– The Hidden, the Interior, the Latent
৭৭ আল-ওয়ালিالوالي
অর্থঃ সমস্ত কিছুর অভিভাবক
✸ Al-Wali
– The One who owns things and manages them.
– The Governor, The Ruler, The Master
৭৮ আল-মুতাআ’লিالمتعالي
অর্থঃ সৃষ্টির গুনাবলীর উর্দ্ধে
✸ Al-Muta’ali
– The One who is clear from the attributes of the creation.
– The Exalted, The most high, one above reproach.
৭৯ আল-বার্البر
অর্থঃ পরম-উপকারী, অণুগ্রহশীল, কল্যাণকারী
✸ Al-Barr
– The One who is kind to His creatures, who covered them with His sustenance and specified whoever He willed among them by His support, protection, and special mercy.
– The Benefactor, The Beneficent, the Pious.
৮০ আত্-তাওয়াবالتواب
অর্থঃ তাওবার তাওফিক দানকারী এবং কবুলকারী, ক্ষমাকারী
✸ At-Tawwab
– The One who grants repentance to whoever He willed among His creatures and accepts his repentance.
– The Acceptor of Repentance, The Forgiver, the Relenting.
৮১ আল-মুনতাক্বিমالمنتقم
অর্থঃ প্রতিশোধ-গ্রহণকারী
✸ Al-Muntaqim
– The One who victoriously prevails over His enemies and punishes them for their sins. It may mean the One who destroys them.
৮২ আল-আ’ফঊالعفو
অর্থঃ পরম-উদার, শাস্তি মউকুফকারী, গুনাহ ক্ষমাকারী, পাপ মোচনকারী
✸ Al-‘Afuww
– The One with wide forgiveness.
– The Forgiver, the effacer, the Pardoner
৮৩ আর-রউফالرؤوف
অর্থঃ পরম-স্নেহশীল, সদয়, সমবেদনা প্রকাশকারী, দয়াশীল
✸ Ar-Ra’uf
– The One with extreme Mercy. The Mercy of Allah is His will to endow upon whoever He willed among His creatures.
– The merciful, the Ever Indulgent.
৮৪ মালিকুল-মুলকمالك الملك
অর্থঃ সমগ্র জগতের বাদশাহ্
✸ Malik Al-Mulk
– The One who controls the Dominion and gives dominion to whoever He willed.
– The Ruler of the Kingdom, king of the Universe
৮৫ যুল-জালালি-ওয়াল-ইকরামذو الجلال والإكرام
অর্থঃ মহিমান্বিত ও দয়াবান সত্তা, মহা মর্যাদাবান, মহা মহত্ত্ব ও মহা সম্মানিত
✸ Zul-l-Jalal wal-Ikram
– The One who deserves to be Exalted and not denied.
– Lord of Majesty and Generosity
৮৬ আল-মুক্ব্সিতالمقسط
অর্থঃ হকদারের হক-আদায়কারী
✸ Al-Muqsit
– The One who is Just in His judgment.
– The Just, the Equitable
৮৭ আল-জামিই’الجامع
অর্থঃ একত্রকারী, সমবেতকারী
✸ Aj-Jami’
– The One who gathers the creatures on a day that there is no doubt about, that is the Day of Judgment.
– The Collector, the comprehensive, Gatherer
৮৮ আল-গণিই’الغني
অর্থঃ অমুখাপেক্ষী ধনী
✸ Al-Ghanee
– The One who does not need the creation.
– The rich, the all sufficing, Self-Sufficient
৮৯ আল-মুগণিই’المغني
অর্থঃ পরম-অভাবমোচনকারী, সমৃদ্ধকারী, উদ্ধারকারী
✸ Al-Mughnee
– The One who satisfies the necessities of the creatures.
– The Enricher, sufficer, the bestower.
৯০ আল-মানিই’المانع
অর্থঃ অকল্যাণরোধক, প্রতিরোধকারী, রক্ষাকর্তা, নিষেধকারী, বারণকারী
✸ Al-Mani’
– The Supporter who protects and gives victory to His pious believers. Al-Mu’tiy
– The Withholder
– The Preventer, the prohibiter, the defender.
৯১ আয্-যরالضار
অর্থঃ ক্ষতিসাধনকারী, যন্ত্রনাদানকারী, উৎপীড়নকারী
✸ Ad-Darr
– The One who makes harm reach to whoever He willed.
– The Distresser , The afflictor, the bringer of Adversity.
৯২ আন্-নাফিই’النافع
অর্থঃ কল্যাণকারী, অনুগ্রাহক, উপকারকারী, হিতকারী
✸ An-Nafi’
– The One who gives benefits to whoever He wills.
– The Beneficial Benefactor
৯৩ আন্-নূরالنور
অর্থঃ পরম-আলো, আলোক
✸ An-Nur
– The One who guides.
– The Light
৯৪ আল-হাদীالهادي
অর্থঃ পথ-প্রদর্শক, হিদায়েতকারী
✸ Al-Hadi
– The One whom with His Guidance His believers were guided, and with His Guidance the living beings have been guided to what is beneficial or them and protected from what is harmful to them.
– The Guide
৯৫ আল-বাদীই’البديع
অর্থঃ অতুলনীয়
✸ Al-Badi’
– The One who created the creation and formed it without any preceding example.
– The Wonderful, the maker, Incomparable
৯৬ আল-বাক্বীالباقي
অর্থঃ চিরস্থায়ী, অবিনশ্বর
✸ Al-Baqi
– The One that the state of non-existence is impossible for Him.
– The Enduring, the Everlasting, the eternal
৯৭ আল-ওয়ারিস’الوارث
অর্থঃ উত্তরাধিকারী
✸ Al-Warith
– The One whose Existence remains.
– The Inheritor, The Heir
৯৮ আর-রাশীদالرشيد
অর্থঃ সঠিক পথ-প্রদর্শক, বিচক্ষণ, সচেতন
✸ Ar-Rashid
– The One who guides.
– The Rightly Guided, The Conscious, the Guide
৯৯ আস-সবুরالصبور
অর্থঃ অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী
✸ As-Sabur
– The One who does not quickly punish the sinners.
– The most Patient, the Enduring.
আল্লাহর ৯৯ নাম মুখস্থ করার ফজিলত:
আল্লাহ তাআলা গোটা বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। মহান সে আল্লাহর তার মহিমা, শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব প্রভৃতির পরিচায়ক কিছু সুন্দর নাম রয়েছে। এগুলোকে সিফাতি বা গুণবাচক নাম বলা হয়। যেগুলোকে বলা হয়- আল আসমাউল হুসনা বা সুন্দর নামসমূহ। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সিফাত ও নাম অগণিত।
আল্লাহর গুণবাচক নামপ্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাকে সেই সব নামেই ডাকো।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৮০)
আল্লাহর ৯৯ নাম মুখস্থকারী জান্নাতে যাবে
আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো অতিশয় মোবারক ও পবিত্র। মহান আল্লাহর পরিচয় সঠিকভাবে জ্ঞাত হয়ে ঈমানকে পূর্ণাঙ্গ করার জন্য আসমাউল হুসনা সম্পর্কে জানা আবশ্যক। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলার এসব নামের জিকিরের প্রচুর ফজিলতের কথা বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে যে এসব নাম মুখস্থ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলার নিরানব্বই— এক কম একশটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামগুলো মুখস্থ করবে, সে জান্নাতে যাবে। অপর বর্ণনায় আছে, তিনি বিজোড়, (তাই) বিজোড়কে ভালবাসেন। (বুখারি, হাদিস : ২৭৩৬, ৭৩৯২; মুসলিম, হাদিস : ২৬৭৭; তিরমিজি, হাদিস : ৩৫০৬; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৮৬০)
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে আল্লাহর সুন্দরতম ও অর্থবোধক এসব নাম নিয়ে দোয়া করার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। মানুষ প্রতিনিয়ত নানা রকম কষ্ট-ক্লেশ, পেরেশানি, দুশ্চিন্তা ও জটিল বিষয়ের সম্মুখীন হয়ে পড়ে। তখন সে আশ্রয় নেবে আল্লাহর রহমতের ছায়ায়, সে ছায়া পড়ে আছে আল্লাহর নানা সিফাতি বা গুণবাচক নামের তাৎপর্যের মধ্যে।
সতর্কতা : আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো আরবি। আর আরবি শব্দের উচ্চারণ বাংলায় বিশুদ্ধভাবে সম্ভব নয়। তারপরও আমরা যতটা সম্ভব আসমাউল হুসনার উচ্চারণ সঠিকভাবে লেখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু অতি সতর্কতার জন্য পাঠকের কাছে অনুরোধ, কোনো বিজ্ঞ আলেমের কাছ থেকে আসমাউল হুসনার বিশুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নেবেন। এটিই আল্লাহর ৯৯ নাম মুখস্থ করার সহজ উপায়।
আল্লাহর নাম সমূহ ও সেগুলোর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা:
১ | আল্লাহ | اللَّـهُ | উপাস্য,মাবুদ |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ শব্দের অর্থ মা’বুদ বা উপাস্য। তিনি সেই সত্বা যার কাছে সমগ্র সৃষ্টিলোক তাদের সকল অভাব-অনটন ও বিপদাপদে পরম ভালবাসা,ভয়ভীতি ও বিনম্র ভক্তি-শ্রদ্ধা সহকারে ছুটে যায়।
এ নামের মধ্যেই তাঁর সকল সুন্দর নাম ও গুণাবলীর সমন্বয় ঘটেছে।
❑ কুরআনে এ নামটি মোট ২৭২৪ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, إِنَّنِي أَنَا اللَّـهُ لَا إِلـهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي
“আমিই আল্লাহ। আমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে সলাত কায়েম কর।”(সূরা ত্বাহা:১৪)
২ | আর রব্ব | الرَّبُّ | প্রতিপালক, স্রষ্টা, পরিচালক, মালিক, অধিপতি |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ সমগ্র বিশ্বচরাচরের স্রষ্টা,অধিপতি, পরিচালক এবং প্রতিপালক। তিনি সৃষ্টি জগতকে অসংখ্য নিয়ামত সহকারে প্রতিপালন করেন আর তার প্রিয়ভাজনদেরকে এমনভাবে প্রতিপালন করেন যেন তাদের অন্তরগুলো সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে।
❑ কুরআনে এ নামটি ৯০০ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, الْحَمْدُ لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
“যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।” (সূরা ফাতিহা: ২)
৩ | আল ওয়াহিদ | الْوَاحِدُ | একক , অনন্য |
৪ | আল আহাদ | الأَحَدُ | অদ্বিতীয়,একক |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। অনন্তকাল ধরে তিনি তাঁর সত্বা, গুণাগুণ, কার্যাবলী, রুবুবিয়াত, উলুহিয়াত সব কিছুতেই অদ্বিতীয় ও অনন্য। তিনি এককভাবে সকল ইবাদত-বন্দেগীর হকদার।
❑ কুরআনে আল ওয়াহিদ নামটি বাইশ বার এবং আল আহাদ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
“এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী।” (সূরা রা’দ: ১৬)
قُلْ هُوَ اللَّـهُ أَحَدٌ
“বলুন,তিনি আল্লাহ,এক।” (সূরা ইখলাস: ১)
৫ | আর রাহমান | الرَّحْمنُ | পরম করুণাময় |
৬ | আর রাহীম | الرََّحِيْمُ | অসীম দয়ালু,অনুগ্রহ শীল,বড় দয়াপরবশ |
ব্যাখ্যা: আর রহমান অর্থ,পরম করুণাময়। অর্থাৎ তিনি মানব, দানব, ফিরিশতা,পশু-পাখি ইত্যাদি সকল সৃষ্টির প্রতি করুণা করেন।
মুসলিম,অমুসলিম,ভালো,মন্দ,নেককার,পরহেজগার নির্বিশেষে সকলকে খাদ্যপানীয়,আলোবাতাস সহ জীবন ধারণের নানা উপকরণ দান করে থাকেন।
আর রাহীম অর্থ, অসীম দয়ালু এবং পরম অনুগ্রহশীল। যিনি ঈমানদারদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে বিশেষভাবে দয়া করেন। অর্থাৎ দুনিয়াতে তাদেরকে হকের পথ দেখান,হকের পথে প্রতিষ্ঠিত রাখেন,নেক কাজ করার শক্তি ও সামর্থ্য দান করেন,আখিরাতে তাদের হিসাব-নিকাশ সহজ করেন, পুলসিরাত পার করেন,জাহান্নামের শাস্তি থেকে হেফাজত করেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান।
❑ কুরআনে ‘আর রাহমান’ নামটি ৫৭ বার এবং আর রাহীম নামটি ১২৩ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন الرَّحْمنُ عَلَّمَ الْقُرْآنَ ,“পরম করুণাময় আল্লাহ। শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন।” (সূরা আর রাহমান: ১২) তিনি আরও বলেন, إِنَّ اللَّـهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ “নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।” (সূরা মুযাম্মিল: ২০)
৭ | আল হাই | الْحَيُّ | চিরঞ্জীব,অমর |
ব্যাখ্যা: তিনি চিরঞ্জীব ও অমর। তাঁর জীবন সকল দিক দিয়ে পরিপূর্ণ। যার মধ্যে সামান্যতম ত্রুটি নাই। তিনি সকল অপূর্ণতার ঊর্ধ্বে। তাঁকে ঘুম ও তন্দ্রা স্পর্শ করে না।
❑ কুরআনে এ নামটি পাঁচবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اللَّـهُ لَا إِلَـه إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ
৮ | আল কাইউম | الْقَيُّومُ | ধারক ও বাহক,শাশ্বত |
“আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক।” (সূরা বাকারা: ২৫৫)
ব্যাখ্যা: তিনি কিছুর ধারক ও বাহক। সব কিছু তাঁর আশ্রয়ে টিকে আছে। তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন বরং প্রতিটি জিনিসই তাঁর মুখাপেক্ষী।
❑ কুরআনে এ নামটি তিনবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اللَّـهُ لَا إِلـهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ
“আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব,সবকিছুর ধারক।” (সূরা বাকারা: ২৫৫)
৯ | আল আওয়াল | الْأَوَّلُ | সর্বপ্রথম,অনাদি |
১০ | আল আখির | الْآخِرُ | সর্বশেষ,অনন্ত,অবিনশ্বর |
ব্যাখ্যা: আওয়াল শব্দের অর্থ প্রথম। আল্লাহ প্রথম ও অনাদি। তাঁর পূর্বে কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না। তিনি ছাড়া যা কিছু আছে সবই পরে সৃষ্টি হয়েছে।
আখির শব্দের অর্থ, সর্বশেষ,অনন্ত ও অবিনশ্বর। তাঁর অস্তিত্বের কোন সমাপ্তি নাই। তাঁর পরে কোন কিছুর অস্তিত্ব বাকি থাকবে না।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
“তিনিই সর্বপ্রথম,তিনিই সর্বশেষ,তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।” (সূরা আল হাদীদ: ৩)
১১ | আয যাহির | الظَّاهِرُ | সব কিছুর ঊর্ধ্বে অবস্থানকারী, প্রকাশমান,সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত |
১২ | আল বাতিন | الْبَاطِنُ | সব কিছুর সন্নিকটে অবস্থানকারী,অপ্রকাশমান, দৃষ্টি হতে অদৃশ্য |
ব্যাখ্যা: আয যাহির: আল্লাহ সব কিছুর উপর প্রকাশমান এবং সব কিছুর ঊর্ধ্বে অবস্থান কারী। তাঁর ঊর্ধ্বে কোন কিছু নাই।
আল বাতিন: অতি সন্নিকটে অবস্থানকারী। তিনি প্রতিটি বস্তুর এত কাছাকাছি অবস্থান করেন যে,তিনি প্রতিটি বস্তুর অতিক্ষুদ্র ও গোপন রহস্য সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তাঁর চেয়ে এত কাছে আর কেউ নাই।
❑ কুরআনে এ দুটি নাম একবার বার করে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
“তিনিই সর্বপ্রথম,তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অ প্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।” (সূরা আল হাদীদ: ৩)
১৩ | আল ওয়ারিস | الْوَارِثُ | চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী,উত্তরাধিকারী, উত্তরসূরি,ওয়ারিস |
ব্যাখ্যা: সৃষ্টি জগত ধ্বংসের পর কেবল তিনি বাকি থাকবেন এবং সকল ধন-সম্পদ তাঁর কাছেই ফেরত যাবে। সব কিছুর প্রকৃত মালিক তিনি। যাকে ইচ্ছা তিনি ধন-সম্পদ দান করেন আর যার থেকে ইচ্ছা ফিরিয়ে নেন। কারণ,তিনি সব কিছুর চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।
❑ কুরআনে এ নামটি তিনবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَإِنَّا لَنَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَنَحْنُ الْوَارِثُونَ
“আমিই জীবনদান করি,মৃত্যু দান করি এবং আমিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।” (সূরা হিজর: ২৩)
১৪ | আল কুদ্দূস | الْقُدُّوسُ | পূত পবিত্র, মহামহিম,মহিমাময় |
ব্যাখ্যা: তিনি সকল ত্রুটি, দুর্বলতা ও অকল্যাণ থেকে মুক্ত ও পবিত্র। যাবতীয় পূর্ণতা ও যোগ্যতার অধিকারী কেবল তিনি।
❑ কুরআনে এ নামটি দুবার উল্লিখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ
“তিনি পূত পবিত্র মহান বাদশাহ।” (সূরা আল হাশর: ২৩)
১৫ | আস সুব্বূহ | السُّبُّوحُ | পূত পবিত্র, মহামহিম, মহিমাময় |
ব্যাখ্যা: তিনি সকল দোষ-ত্রুটির ঊর্ধ্বে। তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি ঐ সকল দুর্বলতা থেকে মুক্ত যা মাবুদের মধ্যে থাকা সঙ্গত নয়। এ সৃষ্টি জগতের সব কিছু কেবল তাঁরই মহিমা ও স্তুতি বর্ণনা করে। সব কিছুই তাঁর নির্মলতা ও স্বচ্ছতার স্বীকৃতি দেয়। কারণ,তিনি যোগ্যতা, পূর্ণতা ও সৌন্দর্যের অপার মহিমায় ভাস্বর।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
❑ যেমন রুকু ও সিজদার দুয়া হিসেবে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:
سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ المَلاَئِكَةِ وَالرُّوحِ
উচ্চারণ: “সুব্বূহুন কুদ্দুসুন,রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।” অর্থ: “(মহান আল্লাহ) পূত পবিত্র, মহিমাময় এবং ফিরিশতা মণ্ডলী ও জিবরাইলের এর প্রভু।” (সহীহ মুসলিম)
১৬ | আস সালাম | السَّلَامُ | ত্রুটিমুক্ত,শান্তি দাতা |
ব্যাখ্যা: তিনি সকল প্রকার দোষত্রুটি থেকে মুক্ত। তিনি নিজে, তাঁর প্রতিটি গুণ এবং কার্যক্রম সবই পরিপূর্ণ।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ
“(তিনিই) একমাত্র মালিক,পূত পবিত্র,দোষত্রুটি মুক্ত।” (সূরা হাশর: ২৩)
‘আস সালাম এর আরেকটি অর্থ শান্তি দাতা। একমাত্র তিনি সৃষ্টি জগতকে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রদান করেন।
❑ যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের সালাম ফিরিয়ে বলতেন:
اللّهُمَّ أَنْتَ السَّلامُ، وَمِنْكَ السَّلامُ، تَبارَكْتَ يا ذا الجَلالِ وَالإِكْرام
“হে আল্লাহ,আপনি দোষত্রুটি থেকে পবিত্র আর শান্তি ও নিরাপত্তা আসে কেবল আপনার পক্ষ থেকে। আপনি বরকতময়,হে মহামহিম ও মর্যাদাবান।” (সহীহ মুসলিম ১/৪১৪)
১৭ | আল মুমিন | الْمُؤْمِنُ | সত্যবাদী,সত্যায়নকারী, নিরাপত্তা দানকারী |
ব্যাখ্যা: তাওহীদের সুদৃঢ় প্রমাণাদির মাধ্যমে তিনি নিজের সত্যতা প্রতিপন্ন করেছেন।
তিনি নবী-রসূল এবং তাদের অনুসারীদেরকে সত্যায়ন করেছেন।
তিনি বান্দাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে জুলুম-অত্যাচারের ব্যাপারে নিরাপত্তা দান করেছেন।
তিনি শরীয়তের বিধি-বিধান প্রদান করে ঈমানদার বান্দাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন।
পার্থিব জীবনে এবং পরকালের মহা আতঙ্কের দিনে যারা তাঁর কাছে আশ্রয়ের জন্য ছুটে যায় তিনি তাদের অন্তরে সস্তি ও শান্তির সুধা ঢেলে দেন।তাঁর কাছে আশ্রয় নিলে সব ভয়,আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তা দুর হয়ে যায়।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ
“(আল্লাহ) পূত পবিত্র, দোষ-ত্রুটি মুক্ত, নিরাপত্তা বিধায়ক, সুরক্ষক, মহা পরাক্রম, মহা প্রতাপশালী,পরম গৌরবান্বিত।” (সূরা আল হাশর: ২৩)
১৮ | আল হাক্ক | الْحَقُّ | মহাসত্য |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহর অস্তিত্ব সত্য। তিনি মাবুদ হিসেবে সত্য। তিনি স্রষ্টা,মালিক এবং বাদশাহ হিসেবে সত্য। তাঁর কথা সত্য। তাঁর সিদ্ধান্ত সত্য। তাঁর ওয়াদা সত্য। তাঁর শরীয়ত সত্য।
❑ কুরআনে এ নামটি দশবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
فَتَعَالَى اللَّـهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ
““ ““আল্লাহ্ অতি মহান, সত্যিকার বাদশাহ।”” সূরা ত্বাহা: ১১৪ ও সূরা মুমিনূন: ১১৬)
১৯ | আল মুতাকাব্বির | الْمُتَكَبِّرُ | অহংকারী,গর্বকারী, বড়াইকারী,দাম্ভিক, পরম গৌরবান্বিত |
ব্যাখ্যা: তিনি সমুহান দাম্ভিক, অহংকারী এবং সৃষ্টি জীবের বৈশিষ্ট্যের ঊর্ধ্বে।
প্রশংসার উদ্দেশ্যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে এ নামে নামকরণ করা যাবে না।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّـهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
“(আল্লাহ) মহা পরাক্রম, মহাপ্রতাশালী, পরম গৌরবান্বিত। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র।” (সূরা আল হাশর: ২৩)
২০ | আল আযীম | الْعَظِيمُ | সুমহান |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা সুমাহান। মর্যাদা,অহঙ্কার ও মহত্ত্বের সব বৈশিষ্ট্য তাঁর মধ্যে সন্নিহিত রয়েছে। তিনি নামে,গুণে ও কর্মে মহৎ। তাই সৃষ্ট জগতের অন্য কেউ অন্তরিকভাবে,মৌখিকভাবে অথবা কাজের মাধ্যমে তাঁর মত সম্মান পাওয়ার হকদার নয়।
❑ কুরআনে এ নামটি নয় বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
“আর সেগুলোকে (আসমান সমূহ ও জমিন) হেফাজত করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ ও সুমহান।” (সূরা বাকারা: ২৫৫)
২১ | আল কাবীর | الْكَبِيرُ | সুবিশাল,অনেক বড় |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা সুবিশাল ও সুমহান। তিনি সত্বাগতভাবে,বৈশিষ্টগতভাবে এবং কর্মগতভাবে অনেক বড়, অনেক মহান। তার চেয়ে বড় ও মহান আর কেউ নেই।
❑ কুরআনে এ নামটি ছয়বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيرُ الْمُتَعَالِ
“তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত,অনেক বড়,সর্বোচ্চ মর্যাদাবান।” (সূরা রা’দ: ৯)
২২ | আল আ’লী | الْعَلِيُّ | সুউচ্চ |
২৩ | আল আ’লা | الْأَعْلَى | সবোর্চ্চ |
২৪ | আল মুতায়া’ল | الْمُتَعَالِ | সুমহান,সর্বোচ্চ মর্যাদাবান,সৃষ্টি জগতের বৈশিষ্ট্যের ঊর্ধ্বে |
ব্যাখ্যা: তিনি সব দিক দিয়ে সুউচ্চ। তাঁর যাত,সিফাত,মর্যাদা সবই অতি মহান। তিনি অসীম শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী।তিনি সৃষ্টি জগত থেকে বহু ঊর্ধ্বে। বিশ্বলোকের সব কিছু্ তাঁরই অধীনস্থ।
❑ কুরআনে আল আ’লী নামটি আটবার, আল আ’লা নামটি দুবার এবং আল মুতায়া’ল নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
‘ “তিনি সুউচ্চ ও সুমহান।” (সূরা বাকারা: ২৫৫)
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى
“আপনি আপনার পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন যিনি সবোর্চ্চ।” (সূরা আ’লা: ১)
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيرُ الْمُتَعَالِ
“তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত। তিনি অনেক বড়, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান।” (সূরা রা’দ: ৯)
২৫ | আল লাতীফ | اللَّطِيفُ | অতিসূক্ষ্ম,সুনিপুণ, অত্যন্ত সুক্ষ্মদর্শী, অতি সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী |
ব্যাখ্যা: তিনি প্রতিটি জিনিস সম্পর্কে অতি নিখুঁত ও সূক্ষ্মভাবে জ্ঞান রাখেন এবং সৃষ্টি জগতের প্রতি একান্ত নিভৃতে তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ পৌঁছিয়ে থাকেন।
❑ কুরআনে এ নামটি সাতবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ
“তিনি অত্যন্ত সুক্ষ্মদর্শী,সুবিজ্ঞ।” (সূরা আনয়াম: ১০৩)
২৬ | আল হাকীম | الْحَكِيمُ | প্রজ্ঞাবান,সুবিজ্ঞ |
ব্যাখ্যা: তিনি মহা প্রজ্ঞার আধার ও সুবিজ্ঞ। পরিকল্পনা,আইন প্রণয়ন এবং শেষ বিচারের দিন কর্মফল প্রদান ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে তিনি মহা প্রজ্ঞাবান। তিনি প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন অতি চমৎকার ও সুনিপুণ ভাবে। তিনি অনর্থক কিছু সৃষ্টি করেন না। তিনি প্রজ্ঞা ব্যতিরেকে কোন আইন প্রণয়ন করেন না বা ফয়সালা দেন না।
❑ কুরআনে এ নামটি ৯১বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيم“তিনি পরাক্রমশালী,প্রজ্ঞাময়।” (সূরা জুমুয়া: ৩)
২৭ | আল ওয়াসি’ | الوَاسِعُ | সর্বব্যাপী পরিব্যাপ্ত, ব্যাপক |
ব্যাখ্যা: তাঁর জ্ঞান সর্বব্যাপী। তাঁর করুণা সব কিছুতেই পরিব্যাপ্ত। তিনি সৃষ্টি জগতের সকলকে জীবিকা প্রদান করেন। কেউ তাঁর প্রশংসা করে শেষ করতে পারবে না।
❑ কুরআনে এ নামটি নয়বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমনআল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্বব্যাপক,সর্বজ্ঞাতা।” (সূরা বাকারা: ১১৫)
২৮ | আল আ’লীম | العَلِيمُ | মহাজ্ঞানী,সর্বজ্ঞাত,সুবিজ্ঞ |
২৯ | আল আ’লিম | العَالِمُ | অতি জ্ঞানবান,সুপণ্ডিত |
৩০ | আল্লামুল গুয়ূব | عَلَّامُ الْغُيُوبِ | অদৃশ্য জগত সম্পর্কে সম্যক অবগত,গুপ্ত রহস্য সম্পর্কে সুবিজ্ঞ,গোপন তত্ব বিষয়ে মহা জ্ঞানবান |
ব্যাখ্যা: তিনি প্রকাশ্য ও গোপন সকল বিষয়ে অবগত। অতীত,বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কোন কিছুই তাঁর নিকট গোপন বা অস্পষ্ট নয়।
❑ কুরআনে আল আ’লীম নামটি ১৫৭ বার,আল আ’লিম নামটি ১৩ বার এবং আল্লামুল গুয়ুব নামটি চারবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্বব্যাপক,সর্বজ্ঞাতা।” (সূরা বাকারা: ১১)
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ
“অদৃশ্য ও প্রকাশ্য বিষয়ে সর্বজ্ঞাতা।” (সূরা আনয়াম: ৭৩)
إِنَّكَ أَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ
“নিঃসন্দেহে আপনি অদৃশ্য সম্বন্ধে পরিজ্ঞাত।” (সূরা আনয়াম: ১০৯)
৩১ | আল মালিক | الْمَلِكُ | রাজা,বাদশাহ,সম্রাট |
৩২ | আল মালীক | المَلِيكُ | শাসনকর্তা,মালিক,বাদশাহ |
৩৩ | আল মালেক | المالِك | অধিপতি,কর্তা,সত্বাধিকারী |
ব্যাখ্যা: আকাশ মণ্ডলী,ভূপৃষ্ঠ ও তম্মধ্যস্থিত সব কিছুর রাজত্ব কেবল তাঁর। তাঁর উপর কারও কর্তৃত্ব নেই বরং সব কিছুই তাঁর কর্তৃত্বাধীন। সার্বভৌমত্ব ও বাদশাহি কেবল তাঁর। সমগ্র বিশ্বচরাচরের একচ্ছত্র আধিপত্য একমাত্র তাঁর হাতে।
আল আল মালীক المليك দ্বারা এ অর্থ বুঝায় যে,তাঁর সম্রাজ্য সুবিশাল ও সুবিস্তীর্ণ।
❑ কুরআনে আল মালিক الملك নামটি পাঁচবার,আল মালীক المليك একবার এবং আল মালেক المالك নামটি দুবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ
“(তিনিই) মহান বাদশাহ পবিত্রতম।” (সূরা আল হাশর: ২৩)
فِي مَقْعَدِ صِدْقٍ عِنْدَ مَلِيكٍ مُقْتَدِرٍ
“সত্যের আসনে সর্বশক্তিমান রাজাধিরাজের সান্নিধ্যে।” (সূরা আল ক্বামার: ৫৫)
قُلِ اللَّـهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ
“বলুন,হে আল্লাহ! মহা সম্রাজ্যের মালিক।” (সূরা আলে ইমরান: ২৬)
৩৪ | আল হামীদ | الحَمِيدُ | প্রশংসিত,প্রশংসনীয়,স্তুত |
ব্যাখ্যা: তিনি তাঁর সকল কথা,কাজ,নাম ও গুণে প্রশংসিত। তাঁর আইনকানুন এবং সিদ্ধান্ত প্রশংসিত। সর্বাবস্থায় তিনি প্রশংসার পাত্র। তিনি যাবতীয় হামদ ও স্তুতির একমাত্র হকদার। কারণ,গুণবৈশিষ্ট্যে তিনি সবচেয়ে বেশী পূর্ণতার অধিকারী আর সৃষ্টি জগতের প্রতি তাঁর দয়া অপরিমেয়।
❑ কুরআনে এ নামটি সতেরো বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
إِنَّهُ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“নিশ্চয় তিনি প্রশংসিত মহা মর্যাদাবান।” (সূরা হুদ: ৭৩)
৩৫ | আল মাজীদ | المَجِيدُ | মহা মর্যাদাবান, মহিমান্বিত,গৌরবান্বিত |
ব্যাখ্যা: সকল প্রকার যোগ্যতা,পূর্ণতা গুণ ও বৈশিষ্ট্যে তিনি অতুলনীয়। তিনি নিজে সুমহান এবং তাঁর কার্যাবলী মহৎ। অসীম করুণাময়। বড়ত্ব ও মহত্বের কারণে তিনি সৃষ্টি জগতের নিকট মহা মর্যাদার পাত্র।
❑ কুরআনে এ নামটি দুবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
إِنَّهُ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
“নিশ্চয় তিনি প্রশংসিত মহা মর্যাদাবান।” (সূরা হুদ: ৭৩)
৩৬ | আল খাবীর | الْخَبِيرُ | যিনি সব কিছুর খবর রাখেন, সর্ব বিষয়ে ওয়াকিফহাল, মহাবিজ্ঞ,সর্বজ্ঞ,সর্বজ্ঞানী |
ব্যাখ্যা: তিনি যেভাবে প্রতিটি জিনিসের বাহ্যিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তেমনিভাবে প্রতিটি জিনিসের অভ্যন্তরীণ এবং গোপন রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন।
❑ কুরআনে এ নামটি ৪৫ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
نَبَّأَنِيَ الْعَلِيمُ الْخَبِيرُ
“যিনি সর্বজ্ঞ,সর্ব বিষয়ে ওয়াকিফহাল,তিনি আমাকে অবহিত করেছেন।” (সূরা আত তাহরীম: ৩)
৩৭ | আল ক্বাবী | الْقَوِيُّ | মহা শক্তিধর, মহা ক্ষমতাবান,মহা প্রবল |
ব্যাখ্যা: যিনি অপরিমিত শক্তি এবং অপার ক্ষমতার অধিকারী। কেউ তাকে পরাস্ত করতে পারে না। কেউ তাঁর ফয়সালাকে রদ করার ক্ষমতা রাখে না। তার প্রতিটি নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়। সৃষ্টি জগতের ব্যাপারে তাঁর সকল সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হয়। তিনি ঈমানদার বান্দাদেরকে সাহায্য করে থাকেন, পক্ষান্তরে যারা তাঁর একত্ববাদকে অস্বীকার করে এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে তিনি তাদেরকে কঠিনতর শাস্তির সম্মুখীন করেন।
❑ কুরআনে এ নামটি নয়বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ
“তিনি মহা প্রবল,মহা পরাক্রমশালী। (সূরা শুরা: ১৯)
৩৮ | আল মাতীন | الْمَتِينُ | সুদৃঢ়,অতি মজবুত,সুসংহত |
ব্যাখ্যা: তিনি সুদৃঢ় এবং অসীম শক্তির অধিকারী। তাঁর শক্তি কখনো খর্ব হয় না। তিনি কাজে-কর্মে কখনো কষ্ট, ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব করেন না।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ
“আল্লাহ) মহাশক্তিধর ও সুদৃঢ়।” (সূরা যারিয়াত: ৯৮)
৩৯ | আল আযীয | العَزِيزُ | মহা পরাক্রমশালী, অতি প্রভাবশালী,মহা সম্মানিত |
ব্যাখ্যা: তিনি মহা পরাক্রম,সর্বশক্তিমান ও চির বিজয়ী। তিনি মহা সম্মানিত ও সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী। সমগ্র বিশ্বচরাচর তাঁর শক্তির কাছে পরাস্ত। সমগ্র সৃষ্টি লোক তাঁর মহা প্রতাপের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য।
❑ কুরআন এ নামটি ৯২ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَاعْلَمْ أَنَّ اللَّـهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
“আর জেনে রাখো,নিশ্চয়ই আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী,সুবিজ্ঞ।” (সূরা বাকারা: ২৬০)
৪০ | আল কাহির | الْقَاهِرُ | প্রতাপশালী,পরাক্রমশালী, প্রবল,অপ্রতিরোধ্য, পরাস্ত কারী |
৪১ | আল কাহ্হার | الْقَهَّارُ | মহা প্রতাপশালী,মহা প্রবল, মহা পরাক্রান্ত,মহা পরাক্রমশালী |
ব্যাখ্যা: সব কিছু তাঁর সামনে মাথা নত করতে বাধ্য। দুনিয়ার প্রতাপশালীরা তার কাছে অতি নগণ্য। সৃষ্টি জগত তাঁর দরবারে সিজদাবনত হয়ে পড়ে থাকে। সব কিছু তাঁরই অধীনস্থ। সমগ্র বিশ্বচরাচর তার বিশাল মর্যাদা,আত্মগৌরব,মহত্ব ও গরিমার কাছে অতি তুচ্ছ ও খুব সামান্য।
❑ কুরআনে আল কাহির নামটি দুবার আর আল কাহ্হার নামটি ছয়বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
“তিনি একক,মহা পরাক্রমশালী।” (সূরা রা’দ: ১৬)
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ
“তিনিই পরাক্রান্ত স্বীয় বান্দাদের উপর।” (সূরা আনআম: ১৮)
৪২ | আল কাদির | الْقَادِرُ | ক্ষমতাধর, শক্তিমান |
৪৩ | আল কাদীর | القَدِيرُ | সর্বশক্তিমান, মহা ক্ষমতাধর |
৪৪ | আল মুক্তাদীর | المُقْتَدِرُ | পরম শক্তিমান, অতি ক্ষমতাধর |
ব্যাখ্যা: তিনি যা ইচ্ছা তাই বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা রাখেন। আসমান ও জমিনের কোন কিছুই তাকে বাধা দিতে পারে না। তিনি সীমাহীন ক্ষমতাবান ও পরিপূর্ণ শক্তির অধিকারী।
❑ কুরআনে আল কাদির الْقَادِرُ নামটি ১২ বার,আল কাদীর القَدِيرُ নামটি ৪৫ বার এবং আল মুক্তাদীর المُقْتَدِرُ নামটি চারবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ
“বলুন,তিনিই এমনই শক্তিমান যে,তোমাদের উপর দিক থেকে অথবা পদতল থেকে তোমাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করবেন।” (সূরা আনআম: ৬৫)
وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
“তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।” (সূরা মায়িদা: ১২০)
فِي مَقْعَدِ صِدْقٍ عِنْدَ مَلِيكٍ مُقْتَدِرٍ
“সত্যের আসনে সর্বশক্তিমান রাজাধিরাজের সান্নিধ্যে।” (সূরা আল ক্বামার: ৫৫)
৪৫ | আল জাব্বার | الْجَبَّارُ | মহা প্রতাপশালী,মহা পরাক্রান্ত, শক্তি সঞ্চারকারী,অভাব পূরণকারী,মেরামতকারী, আশ্রয়দাতা |
ব্যাখ্যা: তিনি সুউচ্চ,সবোর্চ্চ ও মহা প্রতাপশালী। তিনি সৃষ্টি জগতের ব্যাপারে যা ইচ্ছা করেন তাই বাস্তবায়িত হয়।
তিনি মহাপ্রতাশালী হয়েও পরম দয়ালু। যিনি মানুষের ভগ্ন হৃদয়ে শক্তি সঞ্চার করেন। তিনি অসহায়,দুর্বল ও অক্ষম আশ্রয় প্রার্থীদেরকে তাঁর মহান দরবারে আশ্রয় দান করেন।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ
“(আল্লাহ) মহা পরাক্রান্ত,প্রতাপান্বিত।” (সূরা আল হাশর: ২৩)
৪৬ | আল খালিক | الْخَالِقُ | স্রষ্টা,উদ্ভাবক |
৪৭ | আল খাল্লাক | الْخَلَّاقُ | মহান সৃষ্টিকর্তা |
ব্যাখ্যা:
- খালিক অর্থ স্রষ্টা ও উদ্ভাবক। যিনি কোন নমুনা ছাড়াই সম্পূর্ণ নতুনভাবে সৃষ্টি করেন।
- খাল্লাক –তথা যিনি ব্যাপক পরিমাণ সৃষ্টি করেন এবং সৃষ্টির ক্ষেত্রে যিনি অতি সুনিপুণ। যার সৃষ্টিতে কোন ত্রুটি বা অপূর্ণতা নেই।
❑ কুরআনে আল খালিক নামটি আটবার এবং খাল্লাক নামটি দুবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
هُوَ اللَّـهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ
“তিনিই আল্লাহ স্রষ্টা,উদ্ভাবক,আকৃতি দানকারী।” (সূরা আল হাশর: ২৪)
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ
“নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা মহান স্রষ্টা,সর্বজ্ঞ।” (সূরা আল হিজর: ৮৬)
৪৮ | আল বারী | الْبَارِئُ | স্রষ্টা,সৃষ্টিকর্তা,উদ্ভাবক |
ব্যাখ্যা: আল বারী অর্থ, যিনি এমন জিনিস উদ্ভাবন করেন পূর্বে যার কোন অস্তিত্ব ছিল না। যিনি তাঁর সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা মাফিক বিশেষভাবে কোন জিনিস সৃষ্টি করেন।
❑ কুরআনে এ নামটি তিনবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
هُوَ اللَّـهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ
“তিনিই আল্লাহ স্রষ্টা,উদ্ভাবক,আকৃতি দানকারী।” (সূরা আল হাশর: ২৪)
৪৯ | আল মুসাব্বির | الْمُصَوِّرُ | আকৃতি ও অবয়ব দানকারী,কারিগর,সৃষ্টিকর্তা |
ব্যাখ্যা: তিনি যেভাবে চান ও যা চান তাই সৃষ্টি করেন। তিনি প্রতিটি জিনিসকে সেভাবেই আকৃতি দান করেন যেভাবে তিনি ইচ্ছা পোষণ করেন। তবে তাঁর সব সৃষ্টি হয় বিশেষ উদ্দেশ্য ও হেকমতের আলোকে।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
هُوَ اللَّـهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ
“তিনিই আল্লাহ স্রষ্টা,উদ্ভাবক,আকৃতি দানকারী।” (সূরা আল হাশর: ২৪)
৪৯ | আল মুহাইমিন | الْمُهَيْمِنُ | তত্ত্বাবধায়ক,কর্তৃত্ব কারী, হেফাজত কারী,রক্ষক |
ব্যাখ্যা: তিনি বান্দাদেরকে কাজ করার শক্তি যোগান,তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন এবং তাদের মৃত্যু ক্ষণ নির্ধারণ করেন। তিনি তাদের সার্বিক অবস্থার খোঁজ রাখেন। তিনি সকলের উপর ক্ষমতাবান। তিনি তাদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখেন।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ
“শান্তি ও নিরাপত্তা দাতা,রক্ষক।” (সূরা আল হাশর: ২৩)
৫১ | আল হাফিয | الحَافِظُ | রক্ষক,তত্ত্বাবধান কারী সংরক্ষণকারী,হেফাযত কারী,যত্নবান |
৫২ | আল হাফীয | الحَفِيظُ | পরম হেফাযত কারী, পরম যত্নবান, অতি যত্নশীল, মহা সংরক্ষক |
ব্যাখ্যা:
- তিনি আকাশ মণ্ডলী, ভূপৃষ্ঠ এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে তার রক্ষণাবেক্ষণ করেন।
- তিনি বান্দাদের আমল সংরক্ষণ করেন।
- তিনি মুমিনদেরকে বিপদাপদ,বিপর্যয়,শয়তান এবং পাপাচার হতে হেফাজত করেন।
❑ কুরআনে উক্ত নামদ্বয় তিনবার করে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
فَاللَّـهُ خَيْرٌ حَافِظًا
“আল্লাহ উত্তম হেফাযতকারী।” (সূরা ইউসুফ: ৬৪)
إِنَّ رَبِّي عَلى كُلِّ شَيْءٍ حَفِيظٌ
“নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক প্রতিটি বস্তুর পরম হেফাযত কারী।” (সূরা হুদ: ৫৭(
৫৩ | আল ওয়ালী | الْوَلِيُّ | সাহায্যকারী,বন্ধু,পৃষ্ঠপোষক, অভিভাবক,কার্যনির্বাহী |
৫৪ | আল মাওলা | الْمَوْلى | অভিভাবক,দায়িত্বশীল, মনিব,প্রভু,বন্ধু |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা সকল সৃষ্টির অভিভাবক, সাহায্যকারী, দায়িত্বশীল ও পৃষ্ঠপোষক। তিনিই সমগ্র বিশ্বচরাচরের মনিব, মালিক, স্রষ্টা,রিজিক দাতা এবং সত্যিকার মাবুদ।
আর তিনি ঈমানদারদের প্রতি বিশেষভাবে অভিভাবকত্ব প্রদান করে থাকেন। অর্থাৎ তিনি তাদেরকে ভালোবাসেন, তাদের শক্তি ও সামর্থ্য যোগান এবং তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করেন।
❑ কুরআনে আল ওয়ালী নামটি পনেরো বার এবং আল মাওলা নামটি ১২ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ الْوَلِيُّ الْحَمِيدُ
“তিনিই প্রশংসিত অভিভাবক ও কার্যনির্বাহী।” (সূরা আশ শুরা: ২৮)
نِعْمَ الْمَوْلى وَنِعْمَ النَّصِيرُ
“আল্লাহ) কতো উত্তম অভিভাবক ও উত্তম সাহায্যকারী!” (সূরা আলে ইমরান: ৪০)
৫৫ | আন নাসির | النَّصِيرُ | সাহায্যকারী,সহায়ক, পৃষ্ঠপোষক |
৫৬ | খাইরুন নাসিরীন | خَيْرُ النَّاصِرِينَ | সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী, সর্বোত্তম পৃষ্ঠপোষক |
ব্যাখ্যা: যিনি তার বান্দাদের যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন। তিনি যাকে সাহায্য করেন তার উপর কেউ বিজয়ী হতে পারে না। আর যাকে লাঞ্ছিত করেন তাকে কেউ সাহায্য করতে পারে না।
❑ কুরআনে আন নাসির النَّصِيرُ নামটি চারবার এবং খাইরুন নাসিরীন خَيرُ النَّاصِرينَনামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
نِعْمَ الْمَوْلى وَنِعْمَ النَّصِيرُ
“আল্লাহ) কতো উত্তম অভিভাবক ও উত্তম সাহায্যকারী!” (সূরা আলে ইমরান: ৪০)
وَهُوَ خَيْرُ النَّاصِرِينَ
“আর তিনি সর্বোত্তম সাহায্যকারী।” (সূরা আলে ইমরান: ১৫০)
৫৭ | আল ওয়াকীল | الوَكِيلُ | দায়িত্বশীল,অভিভাবক, কার্যসম্পাদন কারী |
৫৮ | আল কাফীল | الْكَفِيلُ | সাক্ষী, রক্ষক, জামানত দার |
ব্যাখ্যা: তিনি সৃষ্টি জগতের সার্বিক দায়িত্বশীল। তিনি সকলের আহারের ব্যবস্থা করেন এবং তাদের যাবতীয় অভাব পূরণ করেন। যে তাঁর কাছে আশ্রয় চায় তিনি তার সকল সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।
তিনি তাঁর ওলী বা বন্ধুদের সার্বিক বিষয়ের দায়িত্ব নেন। তাদেরকে সহজ পথে পরিচালিত করেন, কষ্টের পথে থেকে দূরে সরিয়ে দেন এবং তাদের সব বিষয়ে তিনি যথেষ্ট হয়ে যান।
কাফীল অর্থ: সাক্ষ্যদান কারী, রক্ষক, হেফাজত কারী এবং জামিন দাতা।
❑ কুরআনে আল ওয়াকীল নামটি ১৪ বার এবং আল কাফীল নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَكَفَى بِاللَّـهِ وَكِيلًا
“কার্যসম্পাদন কারী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।” (সূরা নিসা: ৮১)
وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللَّـهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلًا
“তোমরা আল্লাহকে তোমাদের উপর সাক্ষী বানিয়েছ।” (সূরা নাহাল: ৯১(
৫৯ | আল কাফী | الكَافِي | যথেষ্ট,পর্যাপ্ত |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ বান্দাদের খাদ্যপানীয় সহ জীবনের সব চাহিদা পূরণ করার জন্য যথেষ্ট। তাদের প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থাপনা কেবল তিনি করেন। তিনি কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন।
তিনি তাঁর ঈমানদার বন্ধুদেরকে বিশেষভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন এবং তাদের সব প্রয়োজন পূরণ করেন। এ ক্ষেত্রেও তিনি একাই যথেষ্ট।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
أَلَيْسَ اللَّـهُ بِكَافٍ عَبْدَهُ
“আল্লাহ কি তাঁর বান্দার পক্ষে যথেষ্ট নন?” (সূরা যুমার: ৩৬)
৬০ | আস সামাদ | الصَّمَدُ | মুখাপেক্ষী হীন,অভাব মুক্ত,স্বয়ং সম্পূর্ণ,আশ্রয়দাতা,সাহায্যকারী |
ব্যাখ্যা: তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন বরং সকল সৃষ্টি জীব তার প্রতি মুখাপেক্ষী। বিপদাপদ,সমস্যা ও কষ্টে সবাই তাঁর কাছেই সাহায্যের ফরিয়াদ নিয়ে ছুটে যায়।
মানব মন যখন ভয়ে-আতংকে মুষড়ে পড়ে তখন তাঁর কাছে ছুটে গেলে তিনি তাতে প্রশান্তির সুধা ঢেলে দেন। আনন্দ-বেদনায়, সুখে-দুখে সর্বাবস্থায় হৃদয় তাঁর দিকেই ধাবিত হয়। তাঁর দরবারেই খুঁজে পায় অনাবিল প্রশান্তি।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اللَّـهُ الصَّمَدُ
“আল্লাহ অমুখাপেক্ষী।” (সূরা ইখলাস: ২)
৬১ | আর রাযযাক | الرَّزَّاقُ | মহা রিজিক দাতা, পর্যাপ্ত আহার্য সরবরাহ কারী |
৬২ | আর রাযিক | الرَّازِقُ | রিজিক দাতা, জীবিকা দান কারী |
ব্যাখ্যা: তিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতকে সাধারণ রিজিক তথা খাদ্য, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি বেঁচে থাকার নানা উপকরণ দান করেন।
আর ঈমানদার বান্দাদেরকে সাধারণ রিজিকের পাশাপাশি বিশেষ রিজিক তথা আল্লাহর প্রতি ঈমান,উপকারী ইলম,হালাল রুজি ইত্যাদি দান করেন।
আর রাযযাক অর্থ,পর্যাপ্ত রিজিক সরবরাহকারী,প্রচুর আহার্য ও জীবনোপকরণ দান কারী।
❑ কুরআনে আল রাযিক নামটি পাঁচবার এবং আর রাযযাক নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
“আপনি আমাদের রিজিক দান করুন। আপনিই শ্রেষ্ঠ রিজিক দাতা।” (সূরা মায়িদা: ১১৪)
إِنَّ اللَّـهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ
“আল্লাহই তো জীবিকা দান কারী,শক্তির আধার,পরাক্রান্ত।” (সূরা যারিয়াত: ৫৮)
৬৩ | আল ফাত্তাহ | الْفَتَّاحُ | মহাবিজয়ী,শাষক, দরজা উন্মোচন কারী |
ব্যাখ্যা: তিনি এমন এক শাষক যিনি তাঁর বান্দাদের জন্য রহমত ও রিজিকের দুয়ারগুলো খুলে দেন এবং জীবন-জীবিকার সকল জটিলতা এবং স্থবিরতা দূর করে চলার পথ উন্মোচন করে দেন।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ الْفَتَّاحُ الْعَلِيمُ
“তিনি ফয়সালা কারী,সর্বজ্ঞ।” (সূরা সাবা: ২৬)
৬৪ | আল মুবীন | الْمُبِينُ | সত্য প্রকাশ কারী,সুস্পষ্ট |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ও একত্ববাদ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। তিনি সৃষ্টি জগতের সামনে সত্যকে প্রস্ফুটিত করেন এবং সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَيَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّـهَ هُوَ الْحَقُّ الْمُبِينُ
“এবং তারা জানতে পারবে যে,অল্লাহই সত্য,(সত্যকে) স্পষ্ট ব্যক্ত কারী।” (সূরা নূর: ২৫(
৬৫ | আল হাদী | الهَادِيُ | পথপ্রদর্শক, হেদায়েত কারী,পরিচালক |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ সৃষ্টি জগতকে তাঁর পরিচয় ও প্রভুত্বের কথা অবগত করেছেন। তিনি তাদেরকে জীবন-জীবিকা,আয়-উপার্জন এবং কল্যাণের পথ দেখিয়েছেন। তিনি তাদেরকে ভালো-মন্দের পার্থক্য চিনিয়েছেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি সিরাতে মুস্তাকীম তথা ইসলামের সহজ-সরল পথে আসার তাওফিক দান করেছেন।
❑ এ নামটি কুরআনে দুবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا
“আর তোমার প্রভুই পথপ্রদর্শক ও সহায়ক রূপে যথেষ্ট।” (সূরা আল ফুরকান: ৩১)
৬৬ | আল হাকাম | الحَكَمُ | বিচার-ফয়সালা কারী,বিচারক, বিধান দাতা |
৬৭ | খাইরুল হাকিমীন | خَيْرُ الْحَاكِمِينَ | শ্রেষ্ঠ বিচারক, সর্বোত্তম ফয়সালা কারী, সর্বোত্তম বিধানকর্তা |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে তাঁর বান্দাদের মধ্যে অত্যন্ত ন্যায়ানুগভাবে বিচার-ফয়সালা করেন।
তাঁর আইন-কানুন, হুকুম-আহকাম, শরীয়ত,তকদীর এবং কর্মফল সবই ন্যায় সঙ্গত।
❑ কুরআনে আল হাকাম নামটি একবার এবং খাইরুল হাকিমীন নামটি পাঁচবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
أَفَغَيْرَ اللَّـهِ أَبْتَغِي حَكَمًا
“তবে কি আল্লাহ্ ছাড়া আমি অন্যকে বিচারক খুজঁবো।” (সূরা আনয়াম: ১১৪)
وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
“(তিনি) সর্বোত্তম বিধানকর্তা।” (সূরা ইউনুস: ১০৯)
৬৮ | আর রাঊফ | الرءُوفُ | পরম মমতাময়, পরম স্নেহশীল, অসীম দয়ালু |
ব্যাখ্যা: তিনি পরম মমতাময় ও অসীম দয়ালু। তিনি দুনিয়াতে সকল সৃষ্টির প্রতি দয়া করেন আর আখিরাতে কেবল তার ঈমানদার ও প্রিয়ভাজন বান্দাদের প্রতি বিশেষভাবে দয়া করবেন। (তথা হাশরের মহাসংকটময় দিনে তাদের হিসাব-নিকাশ সহজ করবেন,জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন এবং পুলসিরাত পার করে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নিবেন…ইত্যাদি।(
❑ কুরআনে এ নামটি দশবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ,মানুষের প্রতি পরম মমতাময়,অসীম করুণার আধার।” (সূরা বাকারা: ১৪)
৬৯ | আল ওয়াদূদ | الوَدُوْدُ | অধিক ভালবাসা দানকারী, অতি প্রিয়ভাজন, ভালবাসার পাত্র |
ব্যাখ্যা: তিনি নবী,রাসূল এবং তাঁদের অনুসারীদেরকে ভালবাসেন।
তিনি বান্দার কাছে তাঁর নিজের জীবন,সন্তান-সন্তুদি,পিতা-মাতা এবং অন্য সব প্রিয় বস্তুর চেয়ে বেশী ভালবাসা পাওয়ার হকদার।
❑ কুরআনে এ নামটি দুবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন,
إِنَّ رَبِّي رَحِيمٌ وَدُودٌ
“নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগার খুবই মেহেরবান অতি স্নেহময়।” (সূরা হুদ: ৯০)
৭০ | আল বার | الْبَرُّ | অনুগ্রহকারী,করুণাময়,দানশীল, সদয়,সদাশয়,পুণ্যবান |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা অফুরন্ত নিয়ামত সম্ভারের অধিকারী। তিনি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অগণিত নিয়ামতরাজিতে ভরপুর। সৃষ্টি জগত এক মূহুর্তের জন্য তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ ছাড়া চলতে পারে না। তিনি সৎকর্ম শীলদের সওয়াব বৃদ্ধি করেন আর অপরাধীদের অপরাধ মার্জনা করেন। তাঁর প্রতিটি ওয়াদাই সত্য।
❑ কুরআনে এই নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّهُ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِيمُ
“তিনি সদাশয়,পরম দয়ালু।” (সূরা তূর: ২৮)
৭১ | আল হালীম | الحَلِيمُ | পরম সহনশীল,অতি সহিষ্ণু |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা পরম সহনশীল এবং অতি সহিষ্ণু। তিনি তাঁর গুনাহগার বান্দাদেরকে শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করেন না। বরং তিনি ক্ষমতা থাকা স্বত্বেও তাদেরকে সুযোগ দেন,যেন তারা ফিরে আসে।
❑ কুরআনে এ নামটি এগারো বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ غَفُورٌ حَلِيمٌ
“নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ অতি ক্ষমাশীল,পরম সহিষ্ণু।” (সূরা আলে ইমরান: ৫৫(
৭২ | আল গাফুর | الْغَفُورُ | ক্ষমা পরায়ন,ক্ষমাশীল |
৭৩ | আল গাফফার | الْغَفَّارُ | অতি ক্ষমাশীল, অতি ক্ষমতা পরায়ন |
৭৪ | গাফিরুয যাম্ব | غَافِرُ الذَّنبِ | পাপ মোচন কারী, পাপ মার্জনা কারী, গুনাহ মাফ কারী |
ব্যাখ্যা: যারা পাপ করে আল্লাহর নিকট তওবা করে তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন এবং দয়া ও মমতার চাদরে বান্দাদের পাপরাশী ঢেকে রাখেন।
গাফফার অর্থ যিনি প্রচুর ক্ষমা করেন। বারবার ক্ষমা করেন। ছোট-বড় সব ধরণের অপরাধ মার্জনা করেন।
❑ কুরআনে আল গাফূর নামটি ৯১ বার, আল গাফফার নামটি পাঁচবার এবং গাফিরুয যাম্বি নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
“আল্লাহই ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়।” (সূরা শুরা: ৫)
هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ
“তিনি মহা পরাক্রমশালী,অতি ক্ষমাশীল।” (সূরা যুমার: ৫)
غَافِرِ الذَّنبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ
“)তিনি) পাপ ক্ষমাকারী,তওবা কবুল কারী।” (সূরা গাফির:৩(
৭৫ | আল আফুউ | العَفُوُّ | মার্জনা কারী,ক্ষমাশীল |
ব্যাখ্যা: বান্দাদের পক্ষ থেকে যত ধরণের পাপাচার ও অন্যায় সংঘটিত হয় আল্লাহ তায়ালা সেগুলো মার্জনা করেন। বিশেষ করে যখন তারা এমন কোন কাজ করে যে কারণে মার্জনা অবধারিত হয়ে যায়। যেমন,একনিষ্ঠ ভাবে তাওহীদ বাস্তবায়ন করা,তওবা-ইস্তিগফার করা, নেক আমল করা ইত্যাদি।
❑ কুরআনে এ নামটি পাঁচবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনা কারী, পরম ক্ষমাশীল।”(সূরা নিসা:৪৩)
৭৬ | আত তাওয়াব | التَوَّابٌ | তওবা কবুল কারী,ক্ষমাশীল |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের যাকে খুশি তাকে গুনাহ করার পরে তওবা করার তৌফীক দেন অত:পর তা কবুল করেন। তওবার মাধ্যমে তিনি বান্দার যাবতীয় পাপ মোচন করে দেন।
❑ কুরআনে এ নামটি এগারো বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّ اللَّـهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
“নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুল কারী,পরম দয়ালু।” (সূরা হুজুরাত: ১২)
৭৭ | আল কারীম | الْكَرِيمُ | দানশীল,মহানুভব,উদার, মর্যাদাবান,সম্মানিত,মহৎ |
৭৮ | আল আকরাম | الْأَكْرَمُ | বড় দানশীল, অধিক সম্মানিত,মহা দয়ালু |
ব্যাখ্যা: আল্লাহর দান, মহানুভবতা ও উদারতার কোন শেষ নাই। তিনি সৃষ্টি জগতের মাঝে অকাতরে কল্যাণ বিতরণ করেন, কিন্তু এ জন্য কোন বিনিময় নেন না। তিনি সম্মান ও মর্যাদার পাত্র।
আল আকরাম অর্থ,সবচেয়ে বড় দানশীল,সর্বাধিক কল্যাণকারী, অতি মহৎ। দান ও বদান্যতায় যার সমকক্ষ কেউ নাই। যার সম্মান-মর্যাদা সবচেয়ে বেশী।
❑ কুরআনে আল কারীম নামটি তিন বার এবং আল আকরাম নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِ
“কিসে তোমাকে তোমার সম্মানিত পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল?” (সূরা ইনফিতার: ৬)
اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ
“পড়ুন,আপনার পালনকর্তা সর্বাধিক সম্মানিত।” (সূরা আলাক: ৬)
৭৯ | আশ শাকির | الشَّاكِرُ | গুণগ্রাহী,কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী, কৃতজ্ঞ,শুকরিয়া আদায়কারী |
৮০ | আশ শাকূর | الشَّكُوْرُ | বিরাট গুণগ্রাহী,অধিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী,কৃতজ্ঞ |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের অল্প ইবাদতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সে জন্য তাদেরকে বড় প্রতিদান দেন। অনুরূপভাবে বান্দাদের পক্ষ থেকে অল্প শুকরিয়াতেই তিনি সন্তুষ্ট হন এবং বিনিময়ে তাদেরকে অনেক পুরষ্কার দেন।
❑ কুরআনুল কারীমে আশ শাকির নামটি দুবার এবং আশ শাকুর নামটি চারবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
فَإِنَّ اللَّـهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
“আল্লাহ্ নিশ্চয়ই গুণগ্রাহী,সর্বজ্ঞ।” (সূরা বাকারা: ১৫৮)
وَاللَّـهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ
“আল্লাহ বড় গুণগ্রাহী,সহনশীল।” (সূরা তাগাবুন: ১৭)
৮১ | আস সামী | السَّمِيعُ | সর্ব শ্রোতা,যিনি সব শুনেন |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা গোপন ও প্রকাশ্য সব কথা শুনেন। বান্দাদের মুখ নিঃসৃত কোন আওয়াজই তাঁর অগোচরে নয়। যারা তাঁকে ডাকে,তাঁর নিকট প্রার্থনা করে বা আরাধনা জানায় সেটা যত নিভৃতেই হোক না কেন তিনি তা শুনেন এবং তাতে সাড়া দেন।
❑ কুরআনে এ নামটি ৪৫ বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
“আর তিনি সর্ব শ্রোতা,সর্ব দ্রষ্টা।” (সূরা শুরা: ১১)
৮২ | আল বাসীর | الْبَصِيْرُ | সর্ব দ্রষ্টা,যিনি সব দেখেন,তীক্ষ দৃষ্টি সম্পন্ন |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ ছোটবড় সব কিছু দেখেন। কোন ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম জিনিস তাঁর সৃষ্টি সীমার বাইরে নেই। সব বিষয়ে তিনি পরিপূর্ণভাবে অবগত।
❑ কুরআনে ৪২ বার এ নামটি উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّهُ بِعِبَادِهِ خَبِيرٌ بَصِيرٌ
“নিঃসন্দেহ তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি পূর্ণ ওয়াকিফহাল,সর্ব দ্রষ্টা।”(সূরা শুরা: ২৭)
৮৩ | আশ শাহীদ | الشَّهِيدُ | সাক্ষী,প্রত্যক্ষদর্শী |
ব্যাখ্যা: কোন কিছুই তাঁর জ্ঞান ও দৃষ্টির বাইরে নয়। আসমানের উপরে কিংবা মাটির অতল গভীরের অণু-পরমাণু সম্পর্কেও তিনি সবিস্তর জ্ঞান রাখেন এবং দিব্য চোখে তা অবলোকন করেন।
❑ কুরআনে এ নামটি আঠারো বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَكَفَى بِاللَّـهِ شَهِيدًا
“সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট।” (সূরা নিসা: ১৬৬)
৮৪ | আর রাকীব | الرَّقِيْبُ | পর্যবেক্ষক,তত্ত্বাবধায়ক,নিয়ন্ত্রক |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ এমন পর্যবেক্ষক যার কাছে কোন কিছু গোপন থাকে না। প্রতিটি শব্দ কম্পন তিনি শুনেন। প্রতিটি দৃশ্যমান বস্তু তিনি দেখেন। প্রতিটি বস্তুকে তিনি তাঁর অসীম জ্ঞান দ্বারা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। তাঁর কাছে কোন কিছুই গোপন নেই।
❑ কুরআনে এ নামটি তিন স্থানে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ বলেন, وَكَانَ اللَّـهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ رَّقِيبًا
“আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন।” (সূরা আহযাব: ৫২)
৮৫ | আল ক্বারীব | القَرِيبُ | নিকটবর্তী,কাছাকাছি,ঘনিষ্ঠ |
ব্যাখ্যা: তিনি জ্ঞানের মাধ্যমে সবার নিকটে অবস্থান করেন। যারা আল্লাহর ইবাদত করে তিনি তাদের কাছে থাকেন ভালবাসার মাধ্যমে,যারা তাঁর নিকট সাহায্য চায় তাদের কাছে থাকেন তাদেরকে সাহায্য করার মাধ্যমে,যারা তাঁকে ডাকে তাদের সাথে থাকেন তাদের ডাকে সাড়া দেয়ার মাধ্যমে…।
❑ কুরআনে এ নামটি তিনবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ
“আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুত: আমি রয়েছি সন্নিকটে।” (সূরা বাকারা: ৮৬)
৮৬ | আল মুজীব | المُجِيبُ | সাড়া দান কারী,জবাব দাতা,কবুল কারী |
ব্যাখ্যা: যখন বান্দা আল্লাহকে ডাকে বা তাঁর কাছে কিছু চায় তখন তিনি তাঁকে এর বিনিময় দান করেন,তার প্রত্যাশা পূরণ করে দেন এবং তাঁর ডাকে সাড়া দেন।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, إِنَّ رَبِّي قَرِيبٌ مُجِيبٌ
“নিশ্চয় আমার পালনকর্তা সন্নিকটে রয়েছেন (এবং বান্দাদের ডাকে) সাড়াদান করেন।” (সূরা হুদ: ৬১)
৮৭ | আল মুহীত | الْمُحِيْطُ | পরিবেষ্টনকারী,পুরোপুরি অবহিত,নিয়ন্ত্রণকারী,বিরাট |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা জ্ঞানের মাধ্যমে সব কিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন। কোন বিষয় তাঁর জ্ঞানের বাইরে নেই। প্রতিটি জিনিসের খুঁটিনাটি সম্পর্কেও তিনি পরিপূর্ণভাবে অবগত।
❑ কুরআনে এ নামটি আটবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, أَلَا إِنَّهُمْ فِي مِرْيَةٍ مِنْ لِقَاءِ رَبِّهِمْ أَلَا إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ مُحِيطٌ
“শুনে রাখ,তারা তাদের পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে সন্দেহে পতিত রয়েছে। শুনে রাখ,তিনি সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।” (সূরা ফুসসিলাত/হা মীম সাজদাহ: ৫৪)
৮৮ | আল হাসীব | الحَسِيبُ | হিসাব গ্রহণ কারী,যথেষ্ট |
ব্যাখ্যা: আল্লাহর উপর যারা ভরসা করেন তিনি তাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি ঈমানদারদের জন্য যথেষ্ট। তিনি বান্দাদের যাবতীয় কার্যক্রমের হিসাব রাখেন এবং কর্ম অনুযায়ী তাদেরকে প্রতিদান দেন। তিনি সব কিছুই করেন হেকমত ও জ্ঞানের আলোকে।
❑ কুরআনে এ নামটি তিনবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَكَفَى بِاللَّـهِ حَسِيبًا
“আল্লাহই হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে যথেষ্ট।” (সূরা নিসা: ৬)
৮৯ | আল গানী | الْغَنِيُّ | ধনী,সম্পদশালী, অমুখাপেক্ষী,অভাব মুক্ত,প্রয়োজন মুক্ত |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা কারো প্রতি মুখাপেক্ষী নন। সৃষ্টি জগতের সবাই তার প্রতি মুখাপেক্ষী। তিনি ধনী আর সমগ্র সৃষ্টি জগত অভাবী।
❑ কুরআনে এ নামটি আঠারো বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, سُبْحَانَهُ هُوَ الْغَنِيُّ
“তিনি পবিত্র,তিনি অমুখাপেক্ষী।” (সূরা ইউনুস: ৭৮)
৯০ | আল ওয়াহাব | الْوَهَّابُ | বড় দাতা,অধিক দানশীল,বদান্য |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহর বদান্যতা সমগ্র সৃষ্টি জগতকে ছেয়ে আছে। তিনি যাকে যা খুশি দান করেন। যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দান করেন। যাকে ইচ্ছা অর্থ-সম্পদ ও সুস্বাস্থ্য দান করেন। রোগ থেকে মুক্তি দান করেন। আহার দান করেন। তাঁর দানের কোন সীমা-সংখ্যা নাই।
❑ কুরআনে এ নামটি তিন বার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, أَمْ عِنْدَهُمْ خَزَائِنُ رَحْمَةِ رَبِّكَ الْعَزِيزِ الْوَهَّابِ
“না কি তাদের কাছে আপনার অতি সম্মানিত মহান দাতা পালনকর্তার রহমতের কোন ভাণ্ডার রয়েছে?” (সূরা সোয়াদ: ৯)
৯১ | আল মুকীত | الْمُقِيْتُ | ক্ষমতাবান,খাদ্য দাতা, পালনকর্তা,লালন পালনকারী |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ ক্ষমতাবান এবং খাদ্য দানকারী। আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি জীবকে প্রয়োজন মাফিক খাদ্য দান করেন। দান করেন প্রয়োজনীয় সব কিছু। কখন কার কি প্রয়োজন তা তিনি জ্ঞানের আলোক নির্ধারণ করে যথাসময়ে পরিমাণ মত তা পৌঁছিয়ে দেন। কেননা,তিনি এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা,পরিচালক এবং লালন-পালনকারী।
❑ কুরআনে এ নামটি একবার উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَكَانَ اللَّـهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ مُقِيتًا
“আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।” (সূরা নিসা: ৮৫)
৯২ | আল কাবিয | الْقَابِضُ | সংকীর্ণ কারী,সংকুচিত কারী,কবজা কারী |
৯৩ | আল বাসিত | الْبَاسِطُ | প্রশস্তকারী,বিস্তারকারী, সম্প্রসারণকারী |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ রিজিক,অর্থসম্পদ ইত্যাদি সংকুচিত করে কাউকে পরীক্ষা করেন এবং এগুলো প্রশস্ত করে দিয়ে কারও প্রতি দয়া করেন। আবার এর বিপরীতটাও হতে পারে। অর্থাৎ কাউকে সীমিত আকারে অর্থসম্পদ এবং রিজিক দেয়াটাই তার প্রতি মহান আল্লাহর দয়ার বর্হি:প্রকাশ আর কারও জন্য এগুলো পর্যাপ্ত আকারে দেয়াটাই পরীক্ষার কারণ। তিনি যা কিছু করেন ইনসাফ ভিত্তিক করেন তাঁর অসীম প্রজ্ঞা এবং ভবিষ্যৎ জ্ঞানের আলোকে।
তিনিই (মালাকুল মাওত ফিরিশতার মাধ্যমে) সৃষ্টি জীবের জান কবজ করেন।
তিনি সৃষ্টি জগতের প্রতি রহমতের ছায়া বিস্তার করেন।
তিনি বান্দার হৃদয়ে প্রশস্ততা এনে দেন এবং সত্য গ্রহণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেন।
মুমিন বান্দা তওবা করলে তিনি তা কবুল করার জন্য দু হাত বাড়িয়ে দেন।
উল্লেখ্য যে,বিপরীত অর্থবোধক এ নাম দুটিকে এক সাথে উল্লেখ করতে হবে। পৃথকভাবে উল্লেখ করা উচিৎ নয়।
❑ কুরআনে এ নাম দুটি উল্লেখিত হয় নি বরং হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْمُسَعِّرُ ، إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْقَابِضُ ، إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْبَاسِطُ
“নিশ্চয় আল্লাহই পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেন। আল্লাহই সংকুচিত কারী আল্লাহই সম্প্রসারণকারী।” (তিরমিযী)
৯৪ | আল মুকাদ্দিম | الْمُقَدِّمُ | অগ্রসরকারী |
৯৫ | আল মুআখখির | الْمُؤَخِّرُ | পশ্চাদগামী কারী, অবকাশ দানকারী |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ সব কিছুকে যথাস্থানে রাখেন। যাকে ইচ্ছা তাকে অগ্রসর করেন আর যাকে ইচ্ছা তাকে পিছিয়ে দেন। তিনি বান্দাদের মধ্যে নবীরাসূল এবং তাঁর প্রিয়ভাজন বান্দাদেরকে অন্য সাধারণ মানুষের উপর মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি অনেক প্রত্যাশিত বিষয়কে যথাসময় থেকে পিছিয়ে দেন। সব কিছুই করেন তার ন্যায় সঙ্গত সিদ্ধান্ত এবং হেকমতের আলোকে। কেননা তিনি এ বিশ্বলোক সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সব কিছু নির্ধারণ করে রেখেছেন। তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ জ্ঞানের আলোকে জানেন,কোথায় কল্যাণ নিহিত রয়েছে সে হিসেবেই তিনি কার্য সম্পাদন করে থাকেন।
তিনি যাকে এগিয়ে নেন কেউ তাকে পেছাতে পারে না। আর যাকে তিনি পিছিয়ে দেন কেউ তাকে এগিয়ে নিতে পারে না।
❑ এ নাম দুটি কুরআনে আসে নি। তবে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ
“(হে আল্লাহ) আপনি অগ্রসরকারী, আপনি পশ্চাদগামী কারী।” (সহীহ বুখারী)
৯৬ | আর রাফীক | الرِّفِيْقُ | নম্র,কোমল, সহজ |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের প্রতি নরম ও দয়ালু। তাঁর দেয়া বিধিবিধান সহজ-সরল। হিসাব-নিকাশ ও প্রতিদান দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি সহজ পন্থা অবলম্বন করেন। তিনি শরীয়তের বিধি-বিধান প্রণয়নে ক্ষেত্রে ধীর এবং পর্যায়ক্রমিক পন্থা অবলম্বন করেন। যাতে তা পালন করা বান্দাদের জন্য সহজ ও উপযোগী হয়।
❑ কুরআনে এ নামটি বর্ণিত হয় নি, তবে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إِنَّ اللَّهَ رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ ، وَيُعْطِي عَلَى الرِّفْقِ مَا لا يُعْطِي عَلَى الْعُنْفِ
“আল্লাহ নম্র। তিনি নম্রতা ভালবাসেন আর নম্রতার মাধ্যমে যা দেন কঠোরতার মাধ্যমে তা দেন না।” (মুসনাদে আহমদ)
৯৭ | আল মান্নান | الْمَنَّانُ | পরম উপকারী,করুণাময়, সদয়,অনুগ্রহ শীল |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত সদয়,অনুগ্রহ শীল এবং পরম উপকারী। তিনি চাওয়ার আগেই বান্দাদের প্রত্যাশা পূরণ করেন এবং অসীম দয়া ও অগণিত নিয়ামত দানে ধন্য করেন তাদেরকে। আর তাঁর বন্ধুদেরকে তিনি ঈমান,হেদায়েত এবং নেকীর কাজে সাহায্য করার মাধ্যমে বিশেষভাবে অনুগৃহীত করেন।
❑ কুরআনে এ নামটি বর্ণিত হয় নি তবে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
❑ যেমন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, اللَّهمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بأَنَّ لَكَ الحَمْدَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ المَنَّانُ
“হে আল্লাহ,আমরা তোমার কাছে এই দোহায় দিয়ে প্রার্থনা করছি যে,সব প্রশংসা কেবল তোমার,ইবাদত পাওয়ার হকদার কেই নাই তুমি ছাড়া। তুমিই পরম অনুগ্রহ শীল।” (তিরমিযী ও আবু দাঊদ)
৯৮ | আল জাওয়াদ | الْجَوَادُ | দাতা,দানশীল,উদার,বদান্য |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালার অবদান বিশ্বচরাচরের প্রতিটি বস্তুকে ছেয়ে রয়েছে। সমগ্র মখলুকাত তাঁর দয়া,করুণা এবং বিভিন্ন নিয়ামতরাজীতে পরিপূর্ণ।
আর ঈমানদার বান্দাদেরকে তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে আলাদা কিছু নিয়ামত দ্বারা স্বাতন্ত্র্য দান করেছেন। (সেগুলো হল,আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস, হেদায়েত,নেক কাজ করার তাওফিক, সত্যের পথে চলার অনুপ্রেরণা,কিয়ামতের দিন আমলনামা ডান হাতে দান করা,পুলসিরাত পার জাহান্নামের আগুন থেকে হেফাজত করে জান্নাতে প্রবেশ করানো ইত্যাদি।)
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয়নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ جَوَادٌ يُحِبُّ الْجُودَ
“আল্লাহ তায়ালা মহান উদার। তিনি দান ও উদারতাকে ভালবাসেন।” (হিলয়াতুল আউলিয়া)[1]
৯৯ | আল মুহসিন | المُحسِنُ | অনুগ্রহ শীল,দানশীল, পরোপকারী |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দান করেছেন অগণিত নিয়ামত। তিনি মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হন নি বরং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন,জীবনজীবিকার জন্য পথের দিশা দিয়েছেন আর দেখিয়েছেন হেদায়েতের রাস্তা।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি বরং হাদীসে বর্ণিত হয় নি।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إنَّ اللهَ مُحسِنٌ يُحِبُّ الإحسَانَ
“নিশ্চয় আল্লাহ অনুগ্রহ শীল। তিনি অনুগ্রহ করাকে ভালবাসেন।” (ত্ববারানী,সহীহুল জামে হা/১৮২৪)
১০০ | আস সিত্তীর | السِتِّيرُ | গোপন কারী, যিনি দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখেন, যিনি গুনাহ ঢেকে রাখেন |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের গুনাহগুলো গোপন রাখেন। সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করে তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন না।
তদ্রূপ,আল্লাহ এটাও পছন্দ করেন যে,বান্দারা অন্যায়অবিচার থেকে দূরে থাকুক আর তাদের দ্বারা কোন অন্যায়অবিচার ঘটে গেলে সেটা তারা গোপন রাখুক।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ حَلِيمٌ حَيِيٌّ سِتِّيرٌ
“নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সহিষ্ণু,লজ্জাশীল এবং (ত্রুটি-বিচ্যুতি) গোপনকারী।” (আবু দাঊদ ও নাসাঈ) [2]
১০১ | আদ দাইয়ান | الدَّيَّانُ | প্রতিদান দাতা, কর্মফল প্রদানকারী |
ব্যাখ্যা: তিনি এমন বিচারক যিনি মানুষকে আমল অনুযায়ী প্রতিদান দেন।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, يَحْشُرُ اللَّهُ العِبَادَ، فَيُنَادِيهِمْ بِصَوْتٍ يَسْمَعُهُ مَنْ بَعُدَ كَمَا يَسْمَعُهُ مَنْ قَرُبَ : أَنَا المَلِكُ ، أَنَا الدَّيَّانُ
“আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের হাশর করবেন অত:পর সবাইকে এমন আওয়াজে ডাক দিবেন যে,দূরের ও কাছের সবাই সে ডাক শুনতে পাবে। তিনি বলবেন, আমিই বাদশাহ, আমি কর্মফল প্রদানকারী।” (আহমাদ, হাকিম)[3]
১০২ | আশ শাফী | الشَّافِي | আরোগ্য দান কারী,নিরামক |
ব্যাখ্যা: তিনি বান্দাদের দৈহিক ও মানসিক রোগ-ব্যাধি ও সেগুলোর চিকিৎসা সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে অবগত। তিনি যাবতীয় রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য দানে সক্ষম। তাঁর চিকিৎসা ছাড়া প্রকৃত কোন চিকিৎসা নাই।
মানুষকে সকল কষ্ট,ক্লেশ ও বিপদাপদ থেকে একমাত্র তিনি উদ্ধার করেন। তাঁর দেয়া শরীয়তের মধ্যেই রয়েছে সমগ্র মানবতার চিকিৎসা এবং সমাধান।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, اللَّهُمَّ أَذْهِبْ البَأْسَ رَبَّ النَّاسِ ، وَاشْفِ فَأَنْتَ الشَّافِي ، لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا “
“হে আল্লাহ,মানুষের রব,আপনি অসুখ দূর করে দিন। আপনি আরোগ্য দান করুন এমনভাবে যেন কোন রোগ-ব্যাধি বাকি না থাকে। কারণ,আপনি আরোগ্য দান কারী। আপনার আরোগ্য ছাড়া কোন আরোগ্য নেই।” (বুখারী ও মুসলিম)
১০৩ | আস সাইয়েদ | السَّيِّدُ | মালিক,মনিব,প্রভু |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তায়ালা এ সৃষ্টিলোকের মালিক,মনিব ও প্রভু। সব কিছু তাঁর গোলাম। সবাই তার কাছেই ফিরে যাবে। সবাই তাঁর হুকুমে কাজ করে। প্রতিটি বস্তু তাঁর মুখাপেক্ষী;তিনি কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নন। তিনি সৃষ্টি না করলে কারও অস্তিত্ব থাকত না। তিনি বাঁচিয়ে না রাখলে কারো অস্তিত্ব ধরে রাখা সম্ভব হতো না। তিনি সাহায্য না করলে অন্য কোন সাহায্যকারী নেই। সুতরাং প্রকৃত অর্থেই তিনি সৃষ্টি জগতের মালিক,মনিব এবং প্রভু।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, السَّيِّدُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
“সাইয়েদ তথা মনিব ও মালিক হলেন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা।” (মুসনাদ আহমদ)[4]
১০৪ | আল বিতর | الْوِتْرُ | বেজোড়,একক,সঙ্গী বিহীন |
ব্যাখ্যা: আল্লাহ একক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার, সমকক্ষ,প্রতিপক্ষ ও নজির নেই।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, وَإِنَّ اللَّهَ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ
“নিশ্চয় আল্লাহ বেজোড়,তিনি বেজোড় ভালবাসেন।” (বুখারী ও মুসলিম)
১০৫ | আল হায়িঈ | الْحَيِيُّ | লজ্জাশীল, লাজুক |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ অত্যন্ত লজ্জাশীল। আল্লাহ যেমন তাঁর লজ্জাও তেমন। তা অবশ্যই সৃষ্টি জীবের মত নয়। তার লজ্জা হল, সম্মান, বদান্যতা, উদারতা ও মহত্বের লজ্জা।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ حَلِيمٌ حَيِيٌّ سِتِّيرٌ يُحِبُّ الْحَيَاءَ وَالسَّتْرَ
“নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সহিষ্ণু,লজ্জাশীল এবং (বান্দাদের পাপাচার ও দোষত্রুটি) গোপনকারী। তিনি লজ্জা (দোষত্রুটি ও পাপাচার) গোপন করাকে ভালবাসেন।” (আবু দাঊদ ও নাসাঈ)
১০৬ | আত ত্বাইয়েব | الطيِّبُ | পবিত্র,পরিচ্ছন্ন,উত্তম, সেরা,সুন্দর,ভাল |
ব্যাখ্যা: মহান আল্লাহ সকল প্রকার দোষ-ত্রুটি ও অপূর্ণতা থেকে পবিত্র। তিনি নিজে পূত-পবিত্র। তার কার্যক্রম পবিত্র। তাঁর গুণাবলী পবিত্রতম। তাঁর নাম সমূহ পবিত্রতম। তিনি পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন মানুষদেরকে ভালবাসেন। আর পবিত্র জিনিস ছাড়া কিছু গ্রহণ করেন না।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إنَّ اللهَ تَعَالى طيِّبٌ لا يَقْبَلُ إلاَّ طيِّباً
“নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া কিছু গ্রহণ করেন না।” (সহীহ মুসলিম)
১০৭ | আল মু’তী | الْمُعْطِي | দাতা,দানকারী |
ব্যাখ্যা: আল্লাহই প্রকৃত দাতা ও দানকারী। তিনি যা দান করবেন তাতে বাধা দেয়ার কেউ নাই আর যা তিনি বাধা দেন তা দেয়ার কেউ নাই। তাঁর দান অন্তহীন ও অগণিত। তিনি সৃষ্টি জগতের মাঝে নি:শর্তভাবে তাঁর অনুদান বিলিয়ে দেন।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, وَاللَّهُ الْمُعْطِي، وَأَنَا الْقَاسِمُ
“আল্লাহ হলেন দাতা আর আমি হলাম বণ্টনকারী।” (বুখারী ও মুসলিম)
১০৮ | আল জামীল | الجَمِيْلُ | চিরসুন্দর,সুদর্শন,অপরূপ |
ব্যাখ্যা: মহীয়ান আল্লাহ অপার সৌন্দর্যে মণ্ডিত এক মহান সত্বার নাম। তাঁর প্রতিটি নাম সুন্দর। তাঁর গুণ সুন্দর। সুন্দর তাঁর প্রতিটি কর্ম।
❑ কুরআনে এ নামটি উল্লেখিত হয় নি তবে হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
❑ যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, إِنَّ اللَّهَ جَمِيْلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ
“আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে ভালবাসেন।” (সহীহ মুসলিম)
মূল: সাইয়েদ মুহাম্মদ মোস্তফা আল বাকরী
অনুবাদ: শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আবদুল জলীল
সম্পাদনা: শাইখ আবদুল্লাহ আল কাফী বিন আবদুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুাবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
[1] মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৯/১০০, শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকী ৭/৪২৬। ইমাম আলবানী রহ. উক্ত হাদীসকে মুরসাল যঈফ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে সমার্থবোধক আরেকটি সহীহ হাদীস রয়েছে। হাদীসটি হল,
إن الله كريم يحب الكرماء جواد يحب الجود يحب معالي الأخلاق ويكره سفسافها
“আল্লাহ দানশীল। তিনি দানশীলদেরকে ভালবাসেন। তিনি উদার; উদারতা ভালবাসেন। তিনি উন্নত স্বভাব-চরিত্রকে ভালবাসেন আর নিচু স্বভাব-চরিত্রকে ঘৃণা করেন।” সহীহুল জামে, হা/১৮০০)-অনুবাদক
[2] সহীহ নাসাঈ ৪০৪, আলবানী রহ.।
[3] আলবানী রহ. যিলালুল জান্নাহ গ্রন্থে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
[4] আবু দাউদ হা/৪৮০৬, সহীহ সুনান আবুদাউদ, আলবানী।