জন্মান্ধ ব্যাক্তি কি স্বপ্ন দেখতে পায়?
জন্মান্ধ ব্যাক্তি স্বপ্ন দেখতে পারে। গবেষণা বলে যে তারাও স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের পুরো ব্যাপারটিই ঘটে ব্রেইনে। যদি সে জন্মান্ধ হয় তাহলে সে ভিজ্যুয়াল স্বপ্নর না দেখে অন্য সব যে সব ইন্দ্রিয় সচল থাকে তার মাধ্যমে স্বপ্ন দেখে। যেমন কথার মাধ্যমে, স্বাধের মাধ্যমে, স্পর্শের মাধ্যমে, ঘ্রানের মাধ্যমে ও অনুভূতির মাধ্যমে।
জন্মান্ধ ব্যাক্তি কি স্বপ্ন দেখতে পায়?
অন্ধ লোকেরা কীভাবে স্বপ্ন দেখে?
তাদের স্বপ্নটাও তারা যে অন্ধ ওইরকম হয়ে থাকে। তারা হাসি. কান্না কষ্ট সুখ এমন অডিও ড্রাম/স্বপ্ন দেখে। তারা এভাবে নিজের মধ্যে একটা জগৎ বানিয়ে নেয় যে জগৎ এ তারা নিজের ভাবনা চিন্তা দিয়ে সব জিনিস মনের ভিতর একে নেয়। হয়তো তাদের মনে আকা চিত্র টা বাস্তব থেকে আলাদা!
জন্মান্ধরা দুঃস্বপ্ন দেখে বেশি
গবেষণাতে দেখা যায়, জন্মান্ধরা সাধারণ মানুষের তুলনায় চার গুন বেশি স্বপ্ন দেখে থাকে! সাধারণভাবে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, সামনে ঘটিতব্য ভয়ানক ঘটনাগুলোর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার জন্যেই দুঃস্বপ্নগুলো মস্তিষ্কের এক ধরণের মানসিক প্রশিক্ষণ হিসেবে কাজ করে। এর ফলে বাস্তবে যখন সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলো ঘটে, আমরা একটু কম বিচলিত হই।
অধিকাংশ অন্ধ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেই সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যেমন তারা খুব সহজেই দলছুট হয়ে যেতে পারেন, ভীড়ের মাঝে পথ ভুলে হারিয়ে যেতে পারেন বা ছিনতাইয়েরও শিকার হতে পারেন। এসব দুর্ঘটনায় খুব বেশি বিচলিত না হতেই হয়তো তাদের মস্তিষ্ক দুঃস্বপ্নের মাধ্যমে প্রস্তুতি নেয়!
দৈনন্দিন চিন্তা-ভাবনা ও চেতনার মধ্যে একটি বড় জায়গা দখল করে থাকে স্বপ্ন। মানুষ সাধারণত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। আবার স্বপ্নবাজ মানুষেরা জেগে জেগে স্বপ্ন দেখাকেই গুরুত্ব দেন।
ভারতের কিংবদন্তি পরমাণু বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম বলেছেন, স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখো; বরং স্বপ্ন সেটা যা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না!
পল গ্যাবিয়াস (Paul Gabias) হলেন একজন ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক। যিনি অন্ধত্বের উপলব্ধিমূলক ও জ্ঞানীয় দিকগুলিতে গবেষণা পরিচালনা করেন। তিনি অকালিকভাবে জন্মগ্রহণ করে ফলে অক্সিজেনের ওভারেক্সপোজারের কারণে অন্ধ হয়ে যান।
যিনি আজ পর্যন্ত একটি টেবিল দেখেনি। তৰুপ ৬০ বছর বয়েসে,এখনো তার পাশের টেবিলটা অনুভূত করতে কোনো সমস্যা মনে করেন না ।
তিনি বললেন, “এই টেবিলে ও আমার কল্পনার টেবিলে, ঠিক এক রকম। এটির উচ্চতা, গভীরতা, প্রস্থ, টেক্সচার রয়েছে; আমি পুরো জিনিসটিকে একবারে চিত্র করতে পারি। এই কল্পনাটিতে শুধু কোন রঙ নেই।”
সাধারণ মানুষ আলোর বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য (wavelength) সমৃদ্ধ এলাকায় মধ্যে সীমানা সনাক্ত করে পার্শ্ববর্তী বিশ্বের কল্পনা, যা আমরা বিভিন্ন রং হিসাবে দেখতে পাই।
গ্যাবিয়াস (Gabias) মশাইও অনেক অন্ধ মানুষের মত, তার স্পর্শের অনুভূতি ব্যবহার করে ছবি তৈরি করে এবং তার জিহ্বার ক্লিকের গন্ধ এবং তার বেতের নলগুলি শোনার মাধ্যমে এই শব্দগুলি তার আশেপাশের বস্তুগুলির তিনি ঠিক টের পে যান। এই প্রযুক্তি টাকে “ইকোলোকেশন” বলা হয়ে।
জীবনের ছোট খাটো রহস্যউদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “অন্ধকারে সব সময়ই প্রচুর চিত্রাবলী রয়েছে, শুধু সেটা দৃশ্য নয়”।
সাম্প্রতিক মস্তিষ্কের ইমেজিং পরীক্ষার প্রমাণ করে যে অন্ধ মানুষের মস্তিষ্ক এই একই স্নায়ু সার্কিট্রি ব্যবহার করে।
ইস্টার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটির স্পেসিয়াল চেতনা এবং অন্ধত্ব অধ্যয়নরত মনোবিজ্ঞানী মার্টন হেলার (Martin Haller) বলেন, “যখন অন্ধ লোকেরা স্পর্শ করে ব্রেইল ব্যবহার করে, তখন সংবেদনশীল তথ্যটি পাঠানো এবং দৃশ্যমান কর্টেক্সে প্রক্রিয়া করা হয়।”
ইকোলোকেশন এ অভিজাত অন্ধ ব্যক্তিদের জন্যে শব্দ (সাউন্ড) ভিজ্যুয়াল কর্টেক্স এর মধ্যেথেকেই বেরোয়।
তাদের মস্তিষ্কগুলি স্থানীয় মানচিত্রগুলি (spatial maps) উৎপন্ন করার জন্য ইকোগুলি ব্যবহার করে, যা কখনও কখনও এত বিস্তারিত যে তারা পর্বত বাইকিং সক্ষম করে, বাস্কেটবল খেলা এবং নিরাপদে নতুন পরিবেশ অনুসন্ধান করা।