ইন্টার্নেটের রহস্যজনক ধাঁধা সিকাডা ৩৩০১ – Cracking the Code of Cicada 3301
ইন্টার্নেটের রহস্যজনক ধাঁধা সিকাডা ৩৩০১ – Cracking the Code of Cicada 3301.
২০১২ সালের ৪ই জানুয়ারি ফোরচ্যান নামের ওয়েবসাইটের বুলেটিন বোর্ডে ছবি সহ একটি মেসেজ পোস্ট করা হয়। ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী ছবি প্রকাশকারীর নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়। অজ্ঞাত পোস্টকারি সেই ছবিতে ব্যবহারকারীদেরকে চিত্রের মাঝেই লুকানো একটি বার্তা উন্মোচন করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানান। সে মেসেজটিতে লেখা ছিল – “হ্যালো, আমরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের খুঁজছি। তাদের খোঁজার জন্য আমরা একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। এই ছবিতে একটি মেসেজ লুকানো আছে। এটাকে খুজে বের করো। এটাই তোমাদেরকে আমাদের কাছে নিয়ে আসবে। আমরা সেসব স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিকে দেখার অপেক্ষায় আছি যারা এটি সম্পূর্ণ করতে পারবে। গুড লাক।” আর নিচে ছিলো একটি কোড। 3310. পুরো ইন্টার্নেট দুনিয়া তোলপার হয়ে গেলো যেনো হঠাৎ করেই। পৃথিবীর সেরা হ্যাকার এবং কোড সমাধানকারীরা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা প্রমাণের জন্য এই পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়লো। আর এই রহস্যময় ধাঁধার নামি দেয়া হয় ‘সিকাডা 3301.
ইন্টার্নেটের রহস্যজনক ধাঁধা সিকাডা ৩৩০১
২০১২ সালের ৪ জানুয়ারী 4chan.org নামের ইমেজ সাবমিশন ওয়েবসাইটে অজ্ঞাত পরিচয়ে একটি নতুন ছবি আপলোড হয় , খবর ছড়িয়ে পড়ে অতি দ্রুত , ছবিটিতে বলা হয় তাদের কিছু বুদ্ধিদিপ্ত মানুষ প্রয়োজন এবং তারা পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের বাছাই করতে চায়, তাদের ছবিতে গোপন সূত্র রয়েছে যা ধরে এগিয়ে গেলেই একমাত্র তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব , নীচে স্বাক্ষর হিসেবে দেয়া থাকে ৩৩০১ এই কোডটি , তাদের পরিচয় হিসেবে থাকে একটি পোকার ছবি ইংরেজিতে যার নাম Cicada.
অনেক মানুষ কোড উদ্ধারে লেগে পড়ে । সে সময় অনেকে ধাপ পার করার পর একটি ধাপে এসে দেখতে পান পাঁচটি ভিন্ন রাষ্ট্রের জিপিএস কো-অর্ডিনেট দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে এ ধাপটিও পার করে তারা আসেন শেষ ধাঁধায়। সে ধাঁধাটির সমাধানের পর একটি ওয়েব লিংক দেওয়া হয় এবং যারা সেখানে যান তাদেরকে অবাক করে দিয়ে লেখা উঠে– “আমরা পশ্চাদ অনুসারী নয়, সবচেয়ে ভালোদের চাই … ফলে এটি পরিষ্কার হয়ে যায় এই কোড কারো সাহায্যে নয় সম্পূর্ন নিজেকেই ভাঙ্গতে হবে ,ফলে প্রথমবারের প্রায় সবাই ই ব্যার্থ হয় …… প্রথমবারে দেয়া কোড পর্যায়ক্রমে প্রায় ১ মাস ধরে চলছিল , একটি কোড সমাধান করার পর তাদের সামনে নতুন কোড আসত , কোড গুলো ছিল অতি জটিল, সাধারন মানুষের পক্ষে এই কোড ভাঙ্গা এক কথায় অসম্ভব ছিল ।
এই কোড কেউ সম্পূর্ন রূপে একা ভাঙ্গতে পেরেছে কিনা তা এখন পর্যন্ত জানা যায় নি , আশ্চর্যের বিষয় হল কারা এই কোড দিচ্ছে কেন দিচ্ছে এটিও জানা সম্ভব হয়নি । তবে মানুষের জল্পনা কল্পনার কোন শেষ নেই বিভিন্ন ধারনা সিকাডা কে নিয়েও রয়েছে কারো মতে সিকাডা হল টপ ইন্টালিজেন্স যেমন সি আই এ , এম আই সিক্স এই রকম কিছু প্রতিষ্ঠানের গোপন নিয়োগ পদ্ধতি ,কারো মতে এরা এমন এক গুপ্ত সংঘ যারা বিশেষ কোন উদ্দ্যেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে , কেও কেও আবার একে এড়িয়া ৫১ এর গোপন কোন প্রযেক্ট এর অংশ দাবি করে ,আবার কারো মতে এটি কোন হ্যাকার গ্রুপ যারা তাদের নতুন কোন আক্রমনের লক্ষে ক্রিপ্টোগ্রাফিতে দক্ষ মানুষ খুজে বেড়াচ্ছে , যে যাই বলুক না কেন এতটুকু নিশ্চিৎ এরা মজা করে গড়ে তোলা কোন সংগঠন নয় , এদের পেছনে রয়েছে অতি দক্ষ , ক্ষমতাবান , সম্পদশালী জনবল।
কারন তাদের এই পাজেল শুধু মাত্র নির্দিষ্ট কোন এলাকা ব্যাপী নয় এটি ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে , কেও যদি প্রশ্ন করে কোন বিষয় এর উপর পাজেল বা ধাধা দেয়া হয় তবে এটি বলা বড়ই কঠিন হয়ে যাবে তার কারন হল ,প্রতিটি ধাধার শুরু ছবির মধ্যের একটি কথা দিয়ে হলেও পরবর্তী পর্যায় গুলোয় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে , যার মধ্যে কবিতা, শিল্পকর্ম, সঙ্গীত, সাহিত্য, মায়ান ক্যালেণ্ডার, দর্শন, গণিত, ক্রিপ্টোগ্রাফি, সংখ্যাতত্ব, প্রযুক্তিবিদ্যা এবং প্রাচীন পাণ্ডুলিপি। এই ধাধার শুরু ইন্টারনেটে হলেও এর কার্যক্রম পরিচালিত হয় টেলিফোনে, গানে, দুস্প্রাপ্য বইতে, ছবি এমনকি বিভিন্ন জায়গায় ছাপানো কাগজের মাধ্যমেও, এবং তা লুকানো হয়েছে এনক্রিপশন এবং এনকোডিং করে।
এই ধাধার সিরিজগুলো শুধুমাত্র কম্পিউটারে বসে সমাধান করা যাবে না, এর জন্য প্রতিযোগীকে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে হবে। ধাধার সূত্রগুলো কিউআর কোড হিসেবে লাগানো থাকে টেলিফোন/ইলেকট্রিক পোল অথবা ডাকবাক্সে। এর জায়গার তালিকায় ইউএস, ফ্রান্স, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া ,রাশিয়া, জাপান, পোলাণ্ড, মেক্সিকো এবং দক্ষিণ কোরিয়া রয়েছে ।
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে আবার হাজির হয় সিকাডা ৩৩০১ এবার থাকে একই ধরনের প্রায় নতুন একটি ধাধা
এই পর্যায়েও প্রতিযোগিরা একটি নির্দিষ্ট যায়গায় গিয়ে আটকিয়ে যায় , এবার ও প্রতিযোগীতা শেষ হয়ে যায় কেও এটির সমাধান করতে পেরেছিল কিনা তা জানা যায়নি , পরবর্তী ম্যসেজ আসে ২০১৪ এর জানুয়ারীতেই২০১৪ এর পর ২০১৫ এবার আর কোন কোড বা ধাধা আসে নি , ফলে চারদিকে গুজব উঠে সিকাডা সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার , কিন্তু সব কথা ভুল প্রমান করে ২০১৬ তে আবার নতুন ধাধা নিয়ে হাজির হয় সিকাডা, যা প্রতিবছরই তারা পরিচালনা করছে ।
২০১৭ সালে তাদের দেয়া সর্বশেষ তথ্য ছিল
তবে গার্ডিয়ানের মতে এই ধাধার সম্পূর্ন শেষ কেও করতে পারেনি অথবা করলেও তার সম্পর্কে কোন তথ্য জানা যায় নি
যে ব্যাক্তি নিয়ে সিকাডা কোড বিষয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছিল সেই ব্যাক্তি হল ৩৪ বছর বয়সী ,সুইডেনের অধিবাসী , একজন ক্রিপ্টোগ্রাফি স্পেসালিস্ট জুয়েল এরিকসন ।
মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীর কঠিনতম এনিগমাটির সমাধান করা ব্যাক্তি ছিলেন তিনি কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক ভাবে তিনি নিজেও এই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছিলেন , ভৌগলিক জটিলতার কারনে তিনি অন্য দেশে না গিয়ে সেই দেশে অবস্থিত তার বন্ধুর সাহায্য নেয় যার জন্য তার পক্ষে আর সামনে এগোনো সম্ভব হয় না । ২০১২ সালে শুরু হওয়া বিশ্বয়কর এই ধাধার কে বা কারা কেন দিয়েছে তার কোন সঠিক তথ্য প্রকাশ পায় নি ,এত সুপরিকল্পিত, জটিল এই ধাধা কেও সমাধান করেছে কিনা এ সম্পর্কেও নেই কোন তথ্য, একে অনলাইনে বিশ্বের সেরা ৫ অমিমাংসিত রহস্যের মধ্যে ধরা হয় ।
হয়ত অদুর ভবিষ্যতে সিকাডার গোপনীয়তা প্রকাশ পাবে , সিকাডার বেশ কয়েকটি ধাধার সমাধান ইন্টারনেট জুড়ে রয়েছে কিন্তু পূর্নাংগ সমাধানের আগ পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে হয়ত কিছুই জানা সম্ভব হবে না।
I was excited to discover this page. I need to to thank you for your time due
to this wonderful read!! I definitely loved every part of it and I have you book marked
to check out new information in your site.