FreelancingInformation

সফলভাবে অনলাইনে ব্যবসা করার উপায় বা কৌশল

বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রযুক্তির উন্নয়ন হওয়ার সাথে সাথে ইন্টারনেট জগৎটাও পৌঁছে গেছে অনেক শীর্ষে। সমাজ ব্যবস্থা খুবেই উন্নত। কেউ আর বেকার থাকেতে চায় না,তাই সবাই চায় নিজের ক্যারিয়ারকে গঠনকরতে। কেউবা চাকরি-বাকরি করে কিংবা কেউবা ব্যবসা-বানিজ্য করে ক্যারিয়ার গঠন করছে। তো আমি আজকে সেরকম একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাচ্ছি।

সফল ভাবে অনলাইনে ব্যবসা করার উপায় বা কৌশল

কেনাকাটা, বিভিন্ন সেবা থেকে শুরু করে অনলাইনে ব্যবসা করা যাচ্ছে বিভিন্ন সেক্টরে। বর্তমানে অনলাইনে ব্যবসা (Online Business) করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন খুব অল্প সময়েই। অনলাইনে জগৎতে ব্যবসা করে প্রায় অনেকেই চায় নিজের ক্যারিয়ারকে গঠন করার। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ব্যবসার টাল সামলাতে না পেরে বাঁধার সম্মুখীন হয়।  তো আমি আজকে চেষ্টা করবো কিভাবে অনলাইনে পন্য বিক্রয় করা যায়।

কোম্পানির নাম

অনলাইন ব্যবসা এবার ভালো করে চিন্তা করে একটা ব্র্যান্ড দাড় করাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোম্পানির নাম টা যেন ছোট হয় কেননা মানুষ এই নাম দিয়েই আপনাকে Google-এ সার্চ করবে। এমন একটি Keyword বেছে নিন যা আপনার কোম্পানির নামের মধ্যে থাকে। এটি আপনাকে পরবর্তীতে Google Rangking  করতে সুবিধা করবে। কারন একটি ওয়েবসাইট তো থাকতে হবে। তাই ঐ ধারণা অনুযায়ী আপনাকে অবশ্যই একটি নাম বের করতে হবে।

বিক্রয়যোগ্য পন্য কিভাবে নির্বাচন করবেন

প্রথমে আপনাকে এ বিষয়ে যাচাই করতে হবে যে, অনলাইনে কোন পণ্যের পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে , কোন ধরনের পণ্য মানুষ বেশি ক্রয় করে, অনলাইনে পন্য বিক্রয় করার যদি অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে বিক্রয়যোগ্য পন্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অনেকখানি সমস্যা ফেস করতে হয়। তাই আপনাকে অনলাইনে ব্যবসা শুরুর আগে এই বিষয়ে পুরাপুরি না হলেও অল্প পরিসরে ঞ্জান অর্জন করতে হবে।

  • আপনি অনলাইনে বড় বড় মার্কেটপ্লেস গুলো নিয়ে গবেষণা করুন । সেখানে গিয়ে দেখুন গ্রাহকদের সবচেয়ে চাহিদা কোন পণ্যের প্রতি রয়েছে।
  • এমন সব পণ্য নির্বাচন করবেন না যেসব পণ্য খুব সহজেই পাওয়া যায় আমাদের আশপাশে। কেননা এই সমস্ত পণ্য অনলাইন থেকে কেউ কিনতে চায় না । অতএব এমন সমস্ত পণ্য ক্রয় করবেন যেগুলো আমাদের আশপাশে খুঁজে পাওয়া যায় না।
  • হাই কোয়ালিটি পণ্য নির্বাচন করবেন। পাশাপাশি খেয়াল করবেন সেগুলো যেন দামের দিক দিয়ে কম হয়। কেননা প্রত্যেক মানুষই কম দামে হাই কোয়ালিটি পণ্য খোঁজে
  • খাদ্য জাতিয় পণ্য বাছাই করতে পারেন অনলাইনে ব্যবসার জন্য। কারন পৃথিবীতে যত ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা হোক না কেন খাদ্য বিক্রয় করার ব্যবসায় তা কখনো প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। এটা আমরা কথা নয়, গবেষকদের কথা। যদিও খাদ্য দ্রব্য অনলাইনে বিক্রয় করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
  • লোকাল পণ্য বাছাই করতে পারেন অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য। ধরুন আপনার এলাকায় খুব ভালো খেজুর গুর পাওয়া যায়। এখন এই গুর যদি অনলাইন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে ছরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে ভালো হয়।
  • ফেসবুকে ভিডিও এড সব থেকে বেশি কাস্টমার জেনারেট করে। চেষ্টা করবেন ফেসবুকে ভিডিও এড বুষ্ট করার জন্য। ভিডিও এডে মানুষের বিশ্বাসযোগ্য বৃদ্ধি করে।
  • মার্কেটিং বাজেট নির্ধারন করে নিবেন প্রচারনার পূর্বে। এবং কোন কোন প্লাটফর্মে মার্কেটিং করবেন তার লিষ্ট তৈরি করে নিবেন। প্রথম অবস্থায় বাজেট ২০ ডলার হতে ৩০ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন।
  • পণ্যের প্রচারের জন্য সঠিক প্লাটফর্ম বাছাই করা খুবেই গুরুত্বপূর্ণ। কারন কিছু ক্ষন আগেই আমি বলেছি, প্রতিটি পণ্যের এড যেমন ভিন্ন ভিন্ন হয় তেমনি পণ্যের প্রচারনার জন্য প্লাটফর্ম ভিন্ন হয়। ধরুন আপনি হাই কোয়ালিটির কসমেটিক পণ্য বিক্রয় করতে চাইছেন সেই ক্ষেত্রে আপনার এডের মাধ্যম কী হওয়া উচিত। আমার ব্যক্তিগত মার্কেটিং অভিজ্ঞতা অনুসারে Instagram influencer এক্ষেত্রে উপযুক্ত মাধ্যম হবে।
  • যেহেতু প্রতিটি পণ্যের ধরন ভিন্ন ভিন্ন হয় সেহেতু প্রচারনা ভিন্ন ভিন্ন হবে। যদি মনে করেন পণ্যের ভিডিও বা ছবি ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করলেই হবে। তবে এটা আপনার সম্পূর্ণ ভুল ধারনা, প্রচারনার জন্য।

পণ্য বেশি বিক্রি হওয়ার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় ফলো করতে হবে

অনলাইনে পণ্য বেশি বিক্রি হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে। আজ আমি কয়েকটি মাধ্যম তুলে ধরবো। যদি মাধ্যম হলো ফলো করেন তাহলে আপনি অবশ্যই অনলাইনে সফলতা লাভ করবেন ফলে আপনার পণ্য খুব বেশি বিক্রি হবে।

  • ক্রেতাদের কাছে আপনার পণ্যটির বিশ্বাস যোগাতে হবে
  • পণ্যের জন্য খুব চমৎকারভাবে টাইটেল অর্থাৎ শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে। যাতে করে গ্রাহকরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিনার জন্য আগ্রহ বোধ করে।
  • ক্রেতাদের পক্ষ থেকে পণ্যের জন্য রিভিউ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখুন যাতে করে খুব সহজেই ক্রেতারা আপনার পণ্যটির ভালো এবং মন্দের ব্যাপারে রিভিউ দিতে পারে।
  • অবশ্যই পণ্যের সাথে ওয়ারেন্টি অথবা গ্যারান্টি কার্ড সংযুক্ত করুন।
  • আপনার পণ্য দ্বারা যে সমস্ত চাহিদা গ্রাহকদের পূর্ণ হবে সেটা উল্লেখ করে দিন।
  • কোন অফার থাকলে তা অবশ্যই লিখে দিন
  • বিশেষ করে কোন ছাড় থাকলে অবশ্যই তা হাইলাইট করুন।

এই সমস্ত বিষয় যদি ফলো করেন তাহলে অবশ্যই আপনার পণ্য অনেক বেশি বিক্রি হবে।

ব্যতিক্রম বিজনেস করা 

অনলাইনে আপনার মত প্রচুর মার্কেটের রয়েছে। তারা প্রত্যেকে আপনার মত প্রোডাক্ট বিক্রি করছে।

তাই আপনার এমন কিছু ব্যতিক্রম পদ্ধতি বা কৌশল অবলম্বন করতে হবে যার ফলে সমস্ত ক্রেতা আপনার দিকে ধাবিত হয় এবং আগ্রহ বোধ করে আপনার পণ্য ক্রয় করার জন্য । এর ফলে আপনি দ্রুত সফল হতে পারবেন।

পণ্যের প্যাকেজিং এবং ডেলিভারি

পণ্যের ধরনের উপর নির্ভর করে প্যাকেজিং এবং ডেলিভারি বিষয়টি নির্ধারন করবেন। পণ্যের প্রকার অনুযায়ি প্যাকেজিং করতে হবে। কাস্টমারের কাজে পণ্য পৌচ্ছানো পর্যন্ত যেন পণ্য ভালো থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।

চেষ্টা করবেন অনলাইনে ব্যবসা শুরু প্রথম থেকেই নিদিষ্ট প্যাকেজিং করার। প্যাকেজিং আপনার পণ্যের ব্রান্ড এবং মূল্যায়ণ স্থাপনের জন্য সহযোগিতা করবে।

পণ্য ভালো করে প্যাকেজিং করে ডেলিভারি দিলে নতুন কাস্টমাররা পণ্য ক্রয় করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে। এবং পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার কাজটি তৃতীয় কোন মাধ্যম দ্বারা করলে ভালো হয়।

পণ্য ফেরত

আপনি যখন কোন অনলাইনে ব্যবসা চালু করবেন তখন পণ্য ফেরতের বিষয়টি মাথায় রাখবেন। প্রথম অবস্থায় একটি নিময়-নীতি তৈরি করবেন পণ্য ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে। এবং কাস্টমার যখন পণ্য ক্রয় করবে তখন ক্রেতাকে সেই নিয়ম-নীতি অবগত করবেন যেন পরর্বতীতে কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি না হয়।

আপনি একটি ফ্রি ব্লগ সাইট ওপেন করে সেখানে পণ্য আপলোড এবং নিয়ম-নীতি লিখে রাখবেন। কাস্টমার পণ্য আর্ডার করার সময় সেই ওয়েবসাইটের লিং প্রভাইড করবেন।

অর্থ গ্রহন

বাংলাদেশে সাধারনত পে-অন ডেলিভারি সাভির্স ভালো চলে। সুতরাং চেষ্টা করুন প্রথম থেকে পে-অন ডেলিভারি দেওয়ার। কারন আপনার পণ্য যদি ভালো হয় তাহলে টাকা দুই দিন আগে বা পরে নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কোন যায় আসবে না।

আর একটি বিষয়, পণ্যের মান ভালো রাখার ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমঝোতা করবেন না। কারন পণ্যের মান ভালো না হলে অনলাইনে ব্যবসা করা সম্ভব নয়।একজন মানুষ পণ্য ক্রয় করার পর ভালো রিভিউ দিলে বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে। তবে খারাপ রিভিউ দিলে ব্যবসা হবে না।

গ্রাহক সেবা: নিজের অবস্থান তৈরি করুন

পণ্য সরবরাহের পরে গ্রাহক সন্তুষ্টির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

”কারো যদি পণ্য নিয়ে আপত্তি থাকে, যে পণ্য বা ছবি, রঙ ইত্যাদি দেয়ার কথা, সেটা না হলে ভিন্ন কিছু হয়, তাহলে সেটা তাক্ষৎনিকভাবে ফেরত নেয়া, বিকল্প পণ্য বা মূল্য ফেরতের ব্যবস্থাগুলো থাকতে হবে। এরকম অভিযোগ তৈরি হলে সেটা যত তাড়াতাড়ি সমাধান করা যাবে,

‘গ্রাহক একবার অসন্তুষ্ট হয়ে ফিরে গেলে তাকে হয়তো আর পাওয়া যাবে না। বরং খারাপ রিভিউ আরও অনেক গ্রাহককে ফিরিয়ে দেবে। সুতরাং ই-কমার্সে টিকে থাকতে হলে গ্রাহক সেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।”

সেই সঙ্গে গ্রাহকদের প্রশ্নের জবাব, অভিযোগের জবাব দ্রুত দিতে হবে। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট টেলিফোন লাইন বা চ্যাটিং লাইন থাকা ভালো, যেখানে যেকোনো ব্যাপারে একজন গ্রাহক তাৎক্ষনিক উত্তর পাবেন।

শেষ কথা : আশা করি উপরে উল্লেখিত অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দিতে পেরেছি। আশাকরি আপনি বুঝতে পেরেছেন অনলাইনে কিভাবে ব্যবসা করা যায় বা কিভাবে অনলাইন ব্যবসা শুরু করব ।

 

Law Giant

A lawyer is a 'legal practitioner' who is an advocate, barrister, attorney, solicitor or legal adviser. Lawyers work primarily to solve the legal problems of individuals or organizations through the practical application of theoretical aspects of the law.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button