TechnologyFreelancing

ওয়েব ৩.০ কি? সাথে সাথে জানবো ওয়েব ১.০ ও ওয়েব ২.০ কি?

ওয়েব ৩.০ কি? সাথে সাথে জানবো ওয়েব ১.০ ও ওয়েব ২.০ কি? ওয়েব 3.0 অনলাইন জগতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে, কিন্তু এ সম্পর্কে খুভ অল্প সংখ্যক মানুষই জানে। ৩.০ জানতে হলে আগে জানতে হবে এর পূর্বসূরী দাদা ও বাবা যথাক্রমে ওয়েব ১.০ ও বাবা ওয়েব ২.০ কে।

ওয়েব ১.০ ও ওয়েব ২.০ কি?

ওয়েব 1.0 একটি পুরানো ইন্টারনেট যা শুধুমাত্র ইন্টারনেট থেকে কোন কিছু মানুষকে পড়তে দেয়।

ওয়েব 1.0 কেবল একটি তথ্য পোর্টাল যেখানে ব্যবহারকারীরা প্রতিক্রিয়া, মন্তব্য এবং প্রতিক্রিয়া পোস্ট করার কোন সুযোগ পায় না।

সহজ ভাষায় যদি বলি আমরা যখন পাঠ্য পুস্তক পড়ি তখন শুধু পড়তেই পারি,এখানে আমরা কিছু নতুন করে লিখতে বা প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে পারিনা।

এখানে শুধু এক পক্ষেরই সু্যোগ থাকে বলার। সেখানে ইন্টারনেট এর গতি ছিল খুভি ধীর। একটি গান ডাউনলোড দিতেই ১ দিন লেগে যেত।

তখন মানুষ অনলাইন বলতে বুজত কেবল এওএল চ্যাট রুম বা এমএসএন ম্যাসেঞ্জার, আস্ক জিভস বা আলতা ভিসতাকে।

আর ইন্টারনেট ব্যাবহার করত খুভ কম মানুষই ।কারন তখন শুধুমাত্র কথা বলতেই লাগত অনেক দামের টেলিফোন ক্যাবল। যার খরচ বহন করা অনেকের পক্ষেইছিল অসাধ্য।

ওয়াব ২.০ কি?

এটি হল-

ইন্টারনেটের উন্নয়নের দ্বিতীয় পর্যায়, যেখানে বিশেষত স্ট্যাটিক ওয়েব পৃষ্ঠা থেকে ইন্টরনেট হয়ে গেল গতিশীল।

যেখানে ব্যাবহারকারীকেও সুযোগ দেয়া হল লাইক,কমেন্ট,মন্তব্য করার,ভিডিও-অডিও আপলোড দেয়ার,নিজে কিছু লিখার।

web 2.0 (ওয়েব ২.০)

ঘূর্ণি মোডেম এবং বিরক্তিকর ইন্টারনেট ডুবে গেল কালের স্রোতে। জন্ম হল সোশ্যাল মিডিয়ার। যেমনঃ ফেসবুকে,টুইটার,ইউটিউব,উইকিপিডিয়া, ফ্লিকার।

যেখানে ব্যাবহারকারীকেও ইন্টারনেট এর কন্টেন্ট বাড়াতে উন্নয়নে অবদান রাখতে পারছে ।এ কারনে ব্যবহারকারীর-তৈরি সামগ্রী এবং সামাজিক মিডিয়াগুলির বৃদ্ধি পেতে থাকে।

ওয়েব ৩.০ আসলে কি?
ওয়েব ৩.০ টেকনোলোজির দুনিয়ায় সাড়া জাগানো একটি নতুন সৃষ্টি। সহজ করে বলতে গেলে ওয়েব ৩.০ হলো “ওয়েব ২.০ + ক্ষমতার হস্তান্তর”।
ওয়েব ৩.০ কি এটি নিয়ে কথা বলার আগে আমরা জেনে নিই ওয়েব ১.০ ও ওয়েব ২.০ কি?
ওয়েব ১.০ – ওয়েব এর সর্বপ্রথম যুগ হলো ওয়েব ১.০। ওয়েব ১.০ কে বলা হতো “রিড অনলি ওয়েব”। ওয়েব ১.০ এর সময় যদি আপনার সামনে কোনো কন্টেন্ট অর্থাৎ কোনো ছবি কিংবা কোনো আর্টিকেল আসতো আপনি সর্বোচ্চ সেটা দেখতে পারতেন কিংবা রিড করতে পারতেন। কিন্ত কোনো ধরনের এঙ্গেজমেন্ট সম্ভব ছিলোনা। আপনি চাইলেই সেখানে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানাতে পারতেন না। যার কারনে এটাকে “রিড অনলি ওয়েব” বলা হয়েছে।
ওয়েব ২.০ – ওয়েব ২.০ কে বলা হয় “রিড রাইট টেকনোলজি”। ওয়েব ১.০ তে আপনারা যেই কন্টেন্ট গুলো শুধু রিড করতে পারতেন সেগুলোতে এখন ওয়েব ২.০ এর বদৌলতে ইন্টারেকশন করতে শুরু করলেন। অর্থাৎ এতদিন যেগুলো দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো আপনি চাইলেই এখন সেখানে নিজের মতামত জানানোর মতন কাজ করতে পারতেন। যার ফলে যেকোনো কন্টেন্টে আপনার মতামত, চিন্তাভাবনা শেয়ার করার কাজ ও করতে পারলেন (অপরপক্ষের ভালো লাগুক কিংবা খারাপ ) আপনি আপনার অপিনিওন লিখে দিতে পারেন।
ওয়েব ২.০ এর কারনে অনেক জনপ্রিয় কিছু অ্যাপ চলে আসে যেমন – “ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, আমাজন” ইত্যাদি।
কিন্তু অসুবিধার জায়গা সৃষ্টি হয় যখন নিরাপত্তার কথা আসে। ওয়েব ২.০ তে মানুষের ডাটা একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে জমা থাকে। যার ফলে ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি হুমকি তে থাকে। বড় বড় টেক জায়ান্টগুলো তাদের একটি নিজেদের সার্ভারে ব্যবহারকারীদের তথ্য জমা রাখে এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারীর তথ্য বিক্রি করেছে এমন নিউজও আছে।
ওয়েব ৩.০ – কেন ওয়েব ৩.০ কে “ওয়েব ২.০ + ক্ষমতার হস্তান্তর” বলেছি? ওয়েব ৩.০ এর ফলে ইন্টারনেটের সবচেয়ে নিরাপদ যুগে আমরা প্রবেশ করতে যাচ্ছি।
ওয়েব ৩.০ তে সবধরনের ক্ষমতা ব্যবহারকারীর হাতে থাকে। অর্থাৎ ওয়েব ৩.০ তে আর ডাটা গুলো কেন্দ্রীয় সার্ভারে জমা থাকেনা। এর ফলে ব্যবহারকারী নিজেই তার তথ্য নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
ওয়েব ৩.০ ব্লকচেইন টেকনোলোজি এর উপর নির্মিত। ব্লকচেইন টেকনোলোজি হলো সেই প্রযুক্তি যা ক্রিপ্টোকারেন্সি কিংবা NFT তে ব্যবহৃত হচ্ছে। যার কারনে হ্যাকিং করাও হয়ে যাবে অসম্ভব।
ইতোমধ্যে ইথারিয়াম কিংবা বিটকয়েন এ ব্লকচেইন প্রযুক্তি দেখা গিয়েছে এবং এখানে সাইটের মালিক কে তা কেউ জানে না। এসব সাইট কিংবা সার্ভিস গুলো সরকার অথবা অন্য কোনো অথোরিটি চাইলেই বন্ধ করে দিতে পারেনা।
বর্তমানে টেক জায়ান্ট গুলো ব্যবহারকারীর তথ্য স্টোর করে রাখে এবং প্রয়োজনে বিলিয়নে ডলারের বিনিময়ে সেগুলো কেনা-বেচা করতে পারে। কিন্ত ওয়েব ৩.০ এসব তথ্য এনক্রিপ্টেড করে দিবে যার ফলে প্রতিষ্ঠান গুলো এমন কিছু করার ক্ষমতা হারাবে।
এছাড়া ও আরও বিভিন্ন অঙ্গনে ওয়েব ৩.০ নতুন মোড় সৃষ্টি করতে চলেছে। যার ফলে সৃষ্টি হবে টেকনোলজির একটি নতুন যুগ।

ওয়েব ৩.০-এর মূল ধারণা :

ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ওয়েব ৩.০ হবে একজন ব্যক্তিগত সহকারীর মতো যে আপনার সম্পর্কে সবই জানে এবং যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে ইন্টারনেটে সব তথ্যাদিতে অ্যাকসেস (access) করতে পারে। অনেকে ওয়েব ৩.০-কে একটি শক্তিশালী ডাটাবেজের সাথে তুলনা করেন। যেখানে ওয়েব ২.০ লোকজনের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে, সেখানে ওয়েব ৩.০ ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্যাদির মধ্যে সংযোগ ঘটাতে পারে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের ধারণা, ওয়েব ৩.০ বর্তমান ওয়েবকে প্রতিস্থাপন করবে। আবার কারো কারো ধারণা, এটি আলাদা নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করবে।

একটি উদাহরণের মাধ্যমে এ ধারণাটি সহজে বুঝা যাবে। ধরুন, ছুটি কাটাতে কোথাও যেতে চাচ্ছেন। এমন কোথাও যেতে চাচ্ছেন, যে জায়গাটি অবকাশযাপনের জন্য খুবই চমৎকার। এ সফরের জন্য আপনার বাজেট তিন হাজার টাকা। আপনার থাকার জন্য একটা চমৎকার জায়গা দরকার। কিন্তু কোনোভাবেই আপনার পক্ষে এ বাজেট অতিক্রম করা সম্ভব নয়। চলাচলের জন্য চমৎকার একটি গাড়িও চাচ্ছেন।

বর্তমান প্রযুক্তিতে একটি চমৎকার ছুটি কাটানোর উপায় খুঁজতে অনেক গবেষণা করা লাগবে। সফরের জায়গা, হোটেল ভাড়া, খাওয়া খরচ, গাড়ি ভাড়া ইত্যাদি প্রতিটি খাতের জন্য আলাদা আলাদা সার্চ করতে হবে এবং ফল পেতে প্রচুর সময় লাগবে। ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়েব ৩.০ আপনার এসব কাজ খুব অল্প সময়ে করে দেবে। একটি সার্চ সার্ভিসের মাধ্যমে উপযুক্ত সার্চ প্যারামিটার ব্যবহার করে পেয়ে যাবেন কাঙ্ক্ষিত ফল। কারণ, ওয়েব ৩.০ ইন্টারনেটের তথ্য বুঝতে সক্ষম হবে।

বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিনগুলো আসলেই আপনার সার্চ আইটেমগুলো বুঝতে সমর্থ নয়। সার্চ ইঞ্জিন বলতে পারে না ওইসব ওয়েব পেজ আপনার সার্চের সাথে আসলেই সম্পর্কযুক্ত কি না। এটা শুধু বলতে পারে, সার্চের কী-ওয়ার্ডগুলো ওইসব ওয়েব পেজে আছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ‘Saturn’ কী-ওয়ার্ড দিতে সার্চ করেন, তাহলে কিছু ওয়েব পেজ পাবেন গ্রহসম্পর্কিত এবং কিছু পাবেন গাড়ি প্রস্ত্ততকারী কোম্পানি সম্পর্কিত।

ওয়েব ৩.০-এর সার্চ ইঞ্জিন হবে এমন, যা শুধু সার্চের কী-ওয়ার্ডগুলোই খুঁজবে না, বরং সার্চের বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে সমর্থ হবে। এটা আপনার সার্চ টিম সম্পর্কিত ফল সরবরাহ করবে এবং অন্য কিছু কনটেন্টের পরামর্শও দেবে। ছুটি কাটানোর উদাহরণানুযায়ী, যদি আপনি সার্চ আইটেম হিসেবে ‘tropical vacation destinations under 3000 BDT’ দিয়ে থাকেন, তাহলে ওয়েব ৩.০ ব্রাউজারে সার্চ ফল হিসেবে একগাদা মজার কাজের তালিকা অথবা কিছু ভালো হোটেলের তথ্য দেবে। ওয়েব ৩.০ সব ইন্টারনেটকে একটি বড় ডাটাবেজ হিসেবে চিন্তা করবে।

ওয়েব ৩.০-এর পেছনে :

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নোভা স্পাইভ্যাকের মতে, ওয়েবের উন্নয়ন প্রতি ১০ বছর পর পর পরিবর্তিত হয়। ওয়েবের প্রথম দশকে সব উন্নয়ন অবকাঠামোগত দিকগুলো নিয়ে ছিল। ওয়েব পেজ তৈরি করার জন্য তখন প্রোগ্রামাররা প্রোটোকল এবং কোড ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরি করত। দ্বিতীয় দশকে ফোকাস চলে গেল সামনের প্রান্তে (Front End)। এখান থেকে ওয়েব ২.০-এর যাত্রা শুরু। এখন লোকজন অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের প্লাটফর্ম হিসেবে ওয়েব পেজ ব্যবহার করে। বর্তমানে আমরা ওয়েব ২.০ দশকের শেষের দিকে আছি। পরবর্তী দশক শুরু হবে ওয়েব ৩.০ দিয়ে। তখন ফোকাস আবার চলে যাবে পেছনের প্রান্তে (Back End)। প্রোগ্রামাররা তখন ওয়েব ৩.০ ব্রাউজারের অগ্রগামী সামর্থ্যগুলো সাপোর্টের জন্য ইন্টারনেট অবকাঠামো নিয়ে গবেষণা করবে। এর পরে আসবে ওয়েব ৪.০। ফোকাস চলে যাবে আবার সম্মুখভাগে এবং আমরা তখন দেখতে পাব হাজার হাজার নতুন প্রোগ্রাম, যা ওয়েব ৩.০-কে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করবে।

Law Giant

A lawyer is a 'legal practitioner' who is an advocate, barrister, attorney, solicitor or legal adviser. Lawyers work primarily to solve the legal problems of individuals or organizations through the practical application of theoretical aspects of the law.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button